শিরোনাম
বরিশালে জাল নোটসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার, উদ্ধার ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা মূল্যমানের নকল মুদ্রাবরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন খাল থেকে উপপরিচালকের লাশ উদ্ধারছাত্রলীগ নেতাকে জিম্মি করে চাঁদা দাবি, ধরা খেলেন ছাত্রদল পরিচয়ধারী ৩ জনবরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে ইউনিক পরিবহনের বাস পুকুরে, ছয় লেন সড়কের দাবিতে উত্তাল জনমতবরিশালে নকল প্রসাধনী বিক্রির সময় গ্রেফতার ৩, ভ্রাম্যমাণ আদালতে এক মাসের কারাদণ্ডবরিশালে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ: মামলা তুলতে চাপ, ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে ধামাচাপার অভিযোগআন্তঃকলেজ ক্রিকেটে দেশসেরা চ্যাম্পিয়ন বিএম কলেজ বরিশালমীরগঞ্জ ফেরিঘাটে ১৩০০ সরকারি বইসহ আটক ১পাকস্থলীর ক্যান্সারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যু“গণঅভ্যুত্থানের শক্তিগুলোকে বিভাজিত দেখতে চাই না” — বরিশালে এ বি পার্টির ফুয়াদ

শিক্ষার্থীদের ৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

প্রো-ভিসিসহ ৩ জনকে দায়ী করলেন উপাচার্য

শিক্ষার্থীদের ৬ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে ছয় দফা দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যান্ড ফ্লোরে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন ছয় ঘণ্টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর আন্দোলনের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

তবে এ আন্দোলনের জন্য প্রো-ভিসিসহ তিন জনকে দায়ী করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। তবে বাকিদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থী মোকাবেল শেখ, মোশারেফ হোসেন ও রফিক বলেন, গত শুক্রবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কমিটির সভা চলাকালে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ, গেট ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়। ওই অভিযোগ প্রত্যাহারে ছয় ঘণ্টা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তারা আরও পাঁচ দাবি উপস্থাপন করেন।

দাবিগুলো হলো—সিন্ডিকেট মেম্বারদের নাম প্রকাশ ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা, রেজিস্ট্রারসহ আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের অপসারণ, ছাত্রসংসদ নির্বাচনে শিক্ষকদের নিয়ে কমিটি করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সব নেতাকর্মীদের অবিলম্বে একাডেমিক ও আইনি শাস্তির আওতায় আনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামো নির্মাণসহ আবাসন সংকট নিরসনের বিষয়টি ১২ ঘণ্টার মধ্যে স্পষ্ট করা।

তারা আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের পর উপাচার্যের কাছে তারা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দাবি উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টের পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে ও সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে চলমান যৌক্তিক আন্দোলনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন বলেন, “জুলাই আন্দোলনেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। প্রথমে শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কোনো দাবি ছিল না, যার জন্য উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিতে হবে। এরপর শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে কথা বলেছে, কিন্তু তাদের মধ্যে কোনো ধরনের ইস্যু ছিল না, যার পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো যায়।”

তিনি আরও বলেন, “এ ঘটনার পেছনে তিনজন ব্যক্তি কাজ করছেন। যারা চিঠি দিয়ে বলেছেন আমরা সিন্ডিকেট সভা বয়কট করছি, তারাই এর পেছনে ইন্ধন দিচ্ছেন। সরকারের নিয়োগ করা লোকজন এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। এ ধরনের কাজ করতে তাদের আইনি বাধা আছে। এরপরও তারা এসব করে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো তথ্যই গোপন থাকে না।”

শুচিতা শারমিন বলেন, “আমি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য। যোগদানের পর থেকেই শিক্ষার্থীদের কী প্রয়োজন, তা নিয়ে কাজ করে চলছি। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো প্রো-ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি আসার পর গেস্ট হাউজে থাকছেন। তাকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাকে বলা হয়েছে, আপনি আপনার সম্মান রক্ষার্থে বাসা ভাড়া করে থাকবেন। ইউজিসি থেকে জানতে চেয়েছে, প্রো-ভিসি কেন গেস্ট হাউজে থাকছেন? আর প্রো-ভিসি ও ট্রেজারারের গেস্ট হাউজের জন্য কেন আসবাবপত্র কিনতে হবে? তারা কি গেস্ট?”

উপাচার্য আরও বলেন, “প্রোভিসি উপাচার্যের অনুমতি ছাড়া বেশ কয়েকটি দাফতরিক চিঠি ইস্যু করেছেন, যা তিনি কোনোভাবেই করতে পারেন না। চিঠি ইস্যু করতে হলে উপাচার্যের অনুমতি নিতে হবে, কিন্তু তিনি কিছুই মানছেন না।”

তার অভিযোগ, “প্রোভিসি শিক্ষার্থীদের ও শিক্ষকদের ভুল তথ্য সরবরাহ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। তবে তিনি যে কাজগুলো করছেন, তা বর্তমান সরকারের আমলে কোনোভাবেই কাঙ্ক্ষিত নয়। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার জন্য যখনই পরিবেশ সৃষ্টি করছি, তখনই গণ্ডগোল তৈরির জন্য ইন্ধন জোগানো হচ্ছে।”

উপাচার্য বলেন, “গত শুক্রবার উপাচার্যের বাসভবনে সিন্ডিকেট মিটিং চলাকালে ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী আজেবাজে কথা বলে স্লোগান দেয়। এ সময় বাসভবনের লোহার গেট ভাঙচুর করা হয়। জুলাই আন্দোলনের সময়ও এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। সিন্ডিকেট সদস্যদের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আমার প্রাণের অংশ, কিন্তু যারা এ ধরনের গণ্ডগোল করছে, তাদেরকে সরকার থেকে ভিন্নভাবে দেখতে নির্দেশনা রয়েছে।”

তিনি বলেন, “শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীর আচরণ পর্যবেক্ষণ করতে হয়। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ও সম্মান নষ্ট করার মতো ঘটনা ঘটে, তবে অবশ্যই মামলা হবে। মামলা প্রত্যাহার করতে হলে তাদের উপাচার্যের সঙ্গে বসতে হবে। যদি তাদের মধ্যে অনুশোচনা থাকে, তাহলে মামলা প্রত্যাহার করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন, শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষকদের বসাসহ একাধিক সংকট রয়েছে। এ নিয়ে তিন কোটি ৯ লাখ টাকার একটি মূল্যায়ন চলছে। ওই টাকা অনুমোদন হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শুরু হবে। এ ছাড়া আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ চলছে। নতুনভাবে মন্ত্রণালয়ে ৫০ কোটি টাকার বাজেট চেয়ে পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গাড়িচাপায় মাইসা নিহত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের অনুমোদন পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সেটির কাজও দ্রুত শুরু হবে বলে জানান উপাচার্য।

এ বিষয়ে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. গোলাম রব্বানি বলেন, “তিনি অভিযোগ করলে আমার করার কিছু আছে বলে মনে হয় না। তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত আমাকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই রাষ্ট্রপতি আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। সেখানে একাডেমিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার দায়িত্ব থাকা উচিত ছিল আমার। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাকে কোনো দায়িত্ব না দিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে।”

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button