মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমের অভিযোগে বিশেষায়িত বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থাটি বাংলাদেশের নিরাপত্তা খাতে সংস্কারের বিষয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করেছে।
‘আফটার দ্য মনসুন রেভ্যুলুশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু রাজনৈতিক অপব্যবহার ঠেকানোই নয়, ভবিষ্যতে নিরাপত্তা বাহিনী যেন দমন-পীড়নের হাতিয়ার না হয়, তা নিশ্চিত করতে এখনই র্যাব বিলুপ্ত করা জরুরি।
প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়, দ্রুত ও কাঠামোগত সংস্কার ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের অর্জিত অগ্রগতি থমকে যেতে পারে এবং ছাত্র আন্দোলনের সাফল্যও ব্যাহত হতে পারে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনীর সংস্কার জরুরি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এইচআরডব্লিউর ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলো অতীতের মতোই হয়রানি চালিয়ে যাচ্ছে এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না।
২০১৭ সালে সুইডিশ একটি রেডিওতে দেওয়া সাক্ষাৎকারের বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এক সিনিয়র র্যাব কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন, বাহিনীটি গুম, হত্যা এবং লাশ গুমের মতো কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। পরবর্তীতে সেসব ঘটনাকে বন্দুকযুদ্ধ বা সন্ত্রাসী হামলা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে মানবাধিকার নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর রাজনৈতিক প্রভাব কমানো, আটকাদেশ সংক্রান্ত আইন বাতিল এবং বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তর ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের কারিগরি সহায়তা, পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন তৈরির সুপারিশ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রেক্ষাপটে র্যাব গঠিত হয়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। ২০২১ সালে যুক্তরাষ্ট্র র্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছিল।
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]