কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক অভিবাসন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে সরাসরি নির্বাচনী চাল বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার বিধানসভায় তিনি এ কথা বলেন। মমতা আরও বলেন, এই আইন প্রণয়নের আগে সংসদে কোনো আলোচনা হয়নি, স্থায়ী কমিটি বা সিলেক্ট কমিটিতেও পাঠানো হয়নি। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী।
বিধানসভায় এই ইস্যুতে একটি প্রস্তাবও গৃহীত হয়, যেখানে অভিযোগ তোলা হয়েছে—বিজেপি শাসিত কয়েকটি রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী শ্রমিকদের শুধুমাত্র সন্দেহের বশে ‘বিদেশি’ আখ্যা দিয়ে আটক করা হচ্ছে। এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতেই মমতা তীব্র আক্রমণ করেন।
তাঁর কথায়, ‘এই নিয়ম আনার আসল উদ্দেশ্য ২০২৬ সালের ভোটে প্রভাব বিস্তার করা। কিন্তু ভোটার তালিকায় কাউকে যুক্ত করেই বিজেপি জিততে পারবে না। এই বিধানসভায় থাকব আমরা, থাকবেন অন্য বিরোধী দলের সদস্যরা। বিজেপির অস্তিত্বই থাকবে না।’
বিধানসভায় মমতার বক্তব্য চলাকালে বিরোধী বিজেপি বিধায়কেরা শোরগোল শুরু করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কাগজ ছুঁড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগ ওঠে। স্পিকার বিমল বন্দ্যোপাধ্যায় চার বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন। এদের মধ্যে অন্যতম দলের প্রধান হুইপ শঙ্কর ঘোষ।
এরপর মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিজেপি বাংলার বিরোধী। তারা সংসদীয় নিয়ম ভেঙে চিৎকার করছে, কাগজ ছুঁড়ছে। এটা অগণতান্ত্রিক, অশোভন এবং বেআইনি। কিন্তু এসব করে আমাকে চুপ করানো যাবে না।’
বিজেপি বিধায়কেরা পাল্টা স্লোগান দেন। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে ‘চোর’ বলে কটাক্ষ করেন। উত্তরে মমতা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম টেনে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চোর তো মোদি। মোদি চোর, অমিত শাহ চোর, বিজেপি চোর।’
এই ধরনের তিক্ত বাক্যবিনিময় বিধানসভাকে উত্তপ্ত করে তোলে।
এবারে কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুসারে আফগানিস্তান, পাকিস্তান এবং প্রতিবেশী এক দেশের সংখ্যালঘুরা যারা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাঁরা বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই থাকতে পারবেন। বিজেপি বলছে, এই উদ্যোগ মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রয়োজনীয়। কিন্তু মমতার অভিযোগ, এই সিদ্ধান্তকে ব্যবহার করা হচ্ছে ভোটে সুবিধা নেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]