গাজীপুরের শ্রীপুরে এক চিহ্নিত ‘সন্ত্রাসী’ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এতে বিক্ষুব্ধ জনতা ও ব্যবসায়ীরা ওই সন্ত্রাসীর বাড়ি ঘেরাও করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) রাতভর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে। বিক্ষুব্ধ জনতা চিহ্নিত ওই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল করে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরামা চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাতভর চলে উত্তেজনা।
অভিযুক্ত সন্ত্রাসী মো. জহিরুল ইসলাম লিটন (৪৭) বরমী ইউনিয়নের বরামা গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৯ জুলাই এই লিটন আগ্নেয়াস্ত্রসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ইসলাম উদ্দিন জানান, সন্ত্রাসী লিটন মাঝেমধ্যে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চাঁদা দাবি করেন। শুক্রবার রাতে তিনি হঠাৎ বরামা চৌরাস্তায় এসে পরপর চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেন। এতে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে দোকানপাট বন্ধ করে দেন। এরপর উত্তেজিত ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা সন্ত্রাসীর বাড়ি ঘেরাও করে।
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা সেলিম বলেন, ‘সে একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। সবাই তাকে ভয় পায়। মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধের সঙ্গে সে জড়িত। সে প্রকাশ্যে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। পরে জনতা ধাওয়া করলে সে পালিয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ জনতা তার বাড়ি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে, কিন্তু পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।’ সন্ত্রাসী লিটনকে গ্রেপ্তারের দাবিতে রাতভর এলাকায় উত্তেজনা ও মিছিল চলে।
এদিকে, অভিযুক্তের স্ত্রী জানান, ঘটনার সময় তাঁর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে কিসের শব্দ শুনতে পেলাম। গুলির মতো মনে হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই শত শত মানুষ এসে আমার ঘরের দরজা-জানালা ভাঙচুর শুরু করে। আমার ঘরে শিশুকন্যা আর শাশুড়ি ছাড়া কেউ নেই।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ফাঁকা গুলির খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং উত্তেজিত জনতাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। রাতভর স্থানীয়রা মিছিল ও মিটিং করেছে। রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হলেও অভিযুক্তকে পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বরামা চৌরাস্তায় তিনটি স্থানে ফাঁকা গুলির কথা বললেও তল্লাশি করে কোনো গুলির খোসা বা আলামত পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৯ জুলাই র্যাব বরমী ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রাম থেকে লিটনকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছিল। একই ইউনিয়নের আরেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী সুমনকে গত ২৯ আগস্ট পুলিশ গ্রেপ্তার করলে তার সহযোগীরা পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সেই হামলায় পুলিশের সাত সদস্য আহত হয়েছিলেন।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]