আপনাকে দিয়ে আর কিছু হবে না, টালবাহানা না করে নির্বাচন দিয়ে বাঘের পিঠ থেকে নেমে আসুন—প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে এমন মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ।
আজ শুক্রবার সকালে নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে সিপিবির চট্টগ্রাম জেলা শাখার ত্রয়োদশ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. এম এম আকাশ বলেন, ‘আপনাকে দিয়ে আর কিছু হবে না। সংস্কার ও বিচার নিয়ে আপনার কর্মকাণ্ড মানুষের মধ্যে কোনো আশা জাগাতে পারছে না। আপনি বরং টালবাহানা না করে নির্বাচন দিয়ে বাঘের পিঠ থেকে নেমে আসুন। সেটা আপনার জন্যও মঙ্গল, দেশের জন্যও মঙ্গল, জাতির জন্যও মঙ্গল।’
সিপিবির এ নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের পর ছাত্রদের ইচ্ছায় অধ্যাপক ড. ইউনূস সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলো তাঁকে সমর্থন দিয়েছিল। কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, তিনি যেন গ্রহণযোগ্য সময়ের মধ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা নির্বাচিত সরকারের হাতে তুলে দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন।
‘কিন্তু আমরা দেখলাম, ইউনূস সেই পথে গেলেন না। তিনি অপ্রত্যক্ষভাবে রাজনৈতিক দল গঠনের কৌশল নিলেন, বন্দরকে বিদেশিদের হাতে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করলেন এবং করিডর দেওয়ার উদ্যোগ নিলেন। ফলে প্রশ্ন উঠছে—ইউনূস কার, কোন অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ক্ষমতায় বসেছেন?’
অধ্যাপক আকাশ বলেন, এ সরকার সংস্কারের নামে ৭ হাজার পৃষ্ঠার দলিল রচনা করেছে। এই অবস্থায় দেশের মানুষ নির্বাচন নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে। নির্বাচন হবে কি না, সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূসের লন্ডন সফরের প্রসঙ্গে ড. আকাশ বলেন, তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি ঘোষণা দিলেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। বোঝা গেল, তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাচন দিতে চান না; বরং চাপে পড়ে নির্বাচন ঘোষণায় বাধ্য হয়েছেন। তিনি যে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়েছেন, সেখান থেকে কীভাবে নামবেন, তা তিনি নিজেই বুঝতে পারছেন না।
দেশে কখনো গণতন্ত্র ছিল না উল্লেখ করে সিপিবির এ নেতা বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার দেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের উত্তরসূরি হলেও তাঁরা মুক্তিযুদ্ধের পতাকা ফেলে দিয়েছিল এবং রাজাকারদের সঙ্গে আপস করেছিল। এ জন্য আজকে আমরা রাজাকারদের মুখ বেঁধে হাসতে দেখছি। এখন তারা ক্ষমতায় আসারও চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের মন্ত্রী এসে এ দেশের মানুষকে সবক দেওয়ার দুঃসাহস দেখাচ্ছে।’
সিপিবি মুক্তিযুদ্ধ ও বাহাত্তরের সংবিধানের প্রশ্নে কোনো আপস করবে না উল্লেখ করে এম এম আকাশ বলেন, ‘রাজাকার-আলবদরদের হাত থেকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আমরা রক্ষা করব। এই বাংলাদেশ হবে গরিব, মেহনতি ও খেটে খাওয়া মানুষের। পাকিস্তানের ২২ পরিবারের মতো সালমান রহমান আর এস আলমের বাংলাদেশ আমরা চাই না।’
চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহার সভাপতিত্বে, সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য মৃণাল চৌধুরী ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
সম্মেলন উদ্বোধনের পর লাল পতাকার একটি মিছিল বের হয়। এরপর নগরের কাজীর দেউড়ির একটি কমিউনিটি সেন্টারে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]