ছাত্রদল নিজেদের অপরাধ ঢাকতে ছাত্রলীগের মতো দায় চাপানোর রাজনীতি করছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রশিবির। এর পাশাপাশি ছাত্রদল শিবিরের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে সংগঠনটি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এই অভিযোগ করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদ ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নজরুল ইসলাম সাদ্দাম।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই-৩৬ হলে রাত ১১টার পরে প্রবেশকারী ৯১ জন ছাত্রীকে প্রশাসন নোটিশ জারি করে। এই ৯১ জন ছাত্রীর পরিচয় প্রকাশ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের শাহ-মখদুম হল শাখার সহসভাপতি আনিসুর রহমান মিলন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপত্তিকর মন্তব্য করেন। তিনি এ শিক্ষার্থীদের ‘বিনা পারিশ্রমিকের যৌনকর্মী’ বলে অভিহিত করেন, যা দেশের সমগ্র নারীসমাজের জন্য অবমাননাকর। ছাত্রশিবির এ মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এ ছাড়া ছাত্রশিবির দাবি করেছে, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত তাদের নেতারা নিয়মিতভাবে নারীদের নিয়ে কটূক্তি, বুলিং ও যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে আসছেন। যেমন—কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানসুরা আলম নিজে নারী হয়েও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের ‘সেবাদাসী’ আখ্যায়িত করেছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন হিজাব পরিহিত নারীদের বিরুদ্ধে যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ শব্দ ব্যবহার করেছেন। ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আল ইমরান নিপ্পন নারীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী জুমাকে নিয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি হাসান আল আরিফ কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নারী নির্যাতন ও শ্লীলতাহানি ছাত্রদলের জন্য নতুন কোনো ঘটনা নয়। ২০০২ সালে তারা বুয়েটের নারী শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনিকে হত্যা করে এবং একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল ও রোকেয়া হলে শত শত ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করে। গত এক বছরে প্রায় ৪৪টি ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রদলের সংশ্লিষ্টতার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এমনকি তাদের নিজ দলের নারী কর্মীরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পাননি। এসব ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে, নারীবিদ্বেষ ও ছাত্রদল একই সূত্রে গাঁথা।
বিবৃতির শেষে ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায় এবং ছাত্রদলকে তাদের নারীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ড পরিহার করে শিক্ষার্থীবান্ধব ও নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়—এমন সাংগঠনিক উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানায়।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]