মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের বুকিত বিন্তাং এলাকার জালান বেদারায় এক ভবনে জুয়া খেলায় মত্ত ছিলেন একদল বিদেশি। তবে তাদের আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগ (জেআইএম) গত রোববার রাতে বিশেষ অভিযানে তাদের আটক করে। আটক ৭৭০ জনের মধ্যে ৩৭৭ জনই বাংলাদেশি।
মালয়েশিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত বার্তা সংস্থা বারনামার খবরে বলা হয়েছে, অভিযানের সময় হঠাৎ উপস্থিতিতে হতভম্ব হয়ে কেউ ভবনে উঠতে গিয়ে, কেউ আবার টেবিলের নিচে কিংবা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুকিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে শেষ পর্যন্ত সবাইকে আটক করা সম্ভব হয়।
অভিবাসন বিভাগের প্রয়োগ শাখার পরিচালক বাসরি উসমান বলেন, স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। তিনি বলেন, ‘গত তিন সপ্তাহ ধরে স্থানীয়রা এলাকায় বিদেশিদের উপস্থিতি ও তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ড নিয়ে অস্বস্তি বোধ করছিলেন। এ কারণেই রোববার রাত সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অপ বেলাঞ্জা নামে এ অভিযান চালানো হয়।’
বাসরি আরও জানান, অভিযানে সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় ছিল অনলাইন জুয়া খেলার একটি আসর। সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কর্মকর্তারা যখন দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন, তখনো সাতজন বিদেশি জুয়ায় মত্ত ছিলেন। তারা অভিযানের খবরই টের পাননি। পরে সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
অভিযানে মোট ১০৬ জন কর্মকর্তা অংশ নেন। সরু গলি ও অন্ধকার পরিবেশের কারণে অভিযান কিছুটা জটিল হলেও তারা ২ হাজার ৪৪৫ জনকে তল্লাশি করেন। এর মধ্যে ছিলেন ১ হাজার ৬০০ জন বিদেশি ও ৮৪৫ জন স্থানীয়। বাসরি জানান, তল্লাশির পর ৭৭০ জন বিদেশিকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বৈধ কাগজপত্র না থাকা, মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থান এবং ভুয়া পরিচয়পত্র বা পাস রাখা।
আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৩৭৭ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ২৩৫ জন মিয়ানমারের পুরুষ, ৭২ জন নেপালি, ৫৮ জন ভারতীয়, ১৭ জন ইন্দোনেশিয়ান, দুই নারী এবং আরও তিনজন পুরুষ ও ছয়জন নারী অন্যান্য দেশ থেকে আসা। তাদের বয়স ২১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে।
অভিযুক্তদের প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য পুত্রজায়ার জেআইএম কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর তাদের বুকিত জলিল ও লেংগেং অভিবাসন আটককেন্দ্রে পাঠানো হবে। বাসরি উসমান বলেন, ‘অভিযানে শনাক্ত হওয়া অপরাধগুলোর মধ্যে রয়েছে অভিবাসন আইন ১৯৫৯ / ৬৩-এর ১৫ (১) (সি) ধারা অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থান, একই আইনের ৬ (১) (সি) ধারা অনুযায়ী বৈধ ভ্রমণ কাগজপত্র না থাকা এবং অভিবাসন বিধিমালা ১৯৬৩-এর ৩৯ (বি) লঙ্ঘন।’ তিনি আরও জানান, তাদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইন ১৯৬৬ এবং মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান বিরোধী আইন ২০০৭-এর অধীনে তদন্ত চলছে।
জনগণ ও নিয়োগদাতাদের সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘অবৈধ অভিবাসীদের আড়াল করলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জনগণ যদি অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে তথ্য দেন, তবে তা আমাদের অভিযানে সহায়তা করবে।’
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]