যুক্তরাজ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসার মেয়াদ শেষে অতিরিক্ত সময় থাকার বিষয়ে কড়াকড়ি শুরু করেছে যুক্তরাজ্যের সরকার। স্বরাষ্ট্র অফিস জানিয়েছে, ভিসার শর্ত ভঙ্গ করলে শিক্ষার্থীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে। এই লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী ও তাঁদের পরিবারকে সরাসরি টেক্সট ও ইমেইলের মাধ্যমে সতর্কবার্তা পাঠানো হচ্ছে।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র অফিসের তথ্যানুযায়ী—গত এক বছরে যুক্তরাজ্যে যত আশ্রয় আবেদন জমা পড়েছে, তার প্রায় ১৩ শতাংশই এসেছে ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে, সংখ্যায় যা প্রায় ১৪ হাজার ৮০০টি আবেদন। এর মধ্যে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের আবেদন ছিল সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৫ হাজার ৭০০ টি। এরপরই ছিল যথাক্রমে ভারত, বাংলাদেশ ও নাইজেরিয়ার শিক্ষার্থীদের অবস্থান।
বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আশ্রয়ের আবেদন গত বছরের তুলনায় কিছুটা কমলেও, ২০২০ সালের তুলনায় এটি প্রায় ছয় গুণ বেশি।
স্বরাষ্ট্রসচিব ইয়েভেট কুপার জানান, অনেক শিক্ষার্থী ভিসার মেয়াদ শেষে আশ্রয় প্রার্থনা করছেন। এমনকি তাঁদের নিজ দেশে কোনো পরিস্থিতির বিরূপ পরিবর্তন না ঘটলেও তাঁরা আশ্রয় চাইছেন। এতে আশ্রয়কেন্দ্র ও হোটেল ব্যবস্থাপনায় চাপ তৈরি হচ্ছে। কুপার বলেন, ‘আমরা প্রকৃত শরণার্থীদের সহায়তা করব। তবে শুধু ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে আশ্রয় চাওয়াটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
সরকারের নতুন পদক্ষেপে ইতিমধ্যেই ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে সরাসরি সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। আগামী মাসগুলোতে আরও অনেক শিক্ষার্থী একই বার্তা পাবেন। এতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, যাদের দেশে থাকার আইনি অধিকার নেই, তাদের অবশ্যই যুক্তরাজ্য ত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় জোর করে বের করে দেওয়া হবে।
সরকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও চাপ দিচ্ছে যাতে তারা ভিসা অনুমোদন ও কোর্স সম্পন্নের ক্ষেত্রে আরও কঠোর মানদণ্ড বজায় রাখে। সম্প্রতি বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা শেষে যুক্তরাজ্যে থাকার সময়সীমাও দুই বছর থেকে কমিয়ে আঠারো মাস করা হয়েছে।
তবে সমালোচকেরা বলছেন, সব আবেদন ভুয়া নয়। অনেকের ক্ষেত্রে দেশে ফিরে যাওয়া সত্যিই ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। শরণার্থী কাউন্সিল জানিয়েছে, কিছু শিক্ষার্থীর দেশের পরিস্থিতি তাঁদের আসার পর নাটকীয়ভাবে বদলে যেতে পারে। ফলে প্রত্যেক আবেদনকে সন্দেহের চোখে দেখা উচিত নয়।
এদিকে যুক্তরাজ্যের সরকার বলছে, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ভিসার অপব্যবহার ঠেকাতে এই ধরনের পদক্ষেপ জরুরি। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করে, ভিসাধারী শিক্ষার্থীদের আশ্রয় আবেদনকে অগ্রাহ্য করলে প্রকৃত ঝুঁকিতে থাকা মানুষদের সুরক্ষা বিপন্ন হতে পারে।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]