সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী।। ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন এখন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও শিক্ষার্থীদের হাতে এর অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার মারাত্মক বিপর্যয় তৈরি করছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার চেয়ে বেশি সময় ব্যয় করছে টিকটক, রিলস বা ইউটিউব শর্টস দেখায়। অল্প বয়সেই তারা অশ্লীল কনটেন্ট, গেম আসক্তি, এমনকি অনলাইন জুয়ার দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এর ফলে পড়াশোনা, নৈতিকতা ও মানসিক সুস্থতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকটক ও শর্ট ভিডিওর নেশা শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট করছে। অনেকে আবার এসব ভিডিও বানিয়ে অর্থ উপার্জন করায় নৈতিক অবক্ষয়ের পথে এগোচ্ছে। একইভাবে ফ্রি ফায়ার, পাবজি বা কল অব ডিউটির মতো গেম শিক্ষার্থীদের আক্রমণাত্মক ও অসামাজিক করে তুলছে। অনলাইন জুয়ার ফাঁদেও অনেক শিক্ষার্থী জড়িয়ে পড়ছে, যা তাদের পড়াশোনা ও পারিবারিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
অভিভাবক ও শিক্ষকদের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, ক্লাসে মোবাইল হাতে থাকলে শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার বদলে গেম খেলে বা ভিডিও দেখে। নকল, প্রশ্নফাঁসসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডেও মোবাইল ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
তাই স্কুল পর্যায়ে মোবাইল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, কলেজে ভর্তি পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট বা অনলাইন কার্যক্রমের প্রয়োজনে সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার অনুমোদনের দাবি উঠেছে। এ জন্য ‘মোবাইল জোন’ চালু, শিক্ষামূলক কাজে সীমাবদ্ধ রাখা এবং ক্লাস চলাকালে ফোন বন্ধ বা নীরব মোডে রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সমাজ গবেষক সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী মনে করেন, “স্কুলে শতভাগ মোবাইল নিষিদ্ধ এবং কলেজে নীতিমালাভিত্তিক ব্যবহারই হতে পারে কার্যকর সমাধান। পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতনতা বাড়াতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিকল্প সৃজনশীল পরিবেশ—যেমন খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও বিজ্ঞানচর্চায় সম্পৃক্ত করতে হবে। কারণ, সুসন্তান গড়ে ওঠে বই, মাঠ আর শিক্ষাঙ্গনে; মোবাইল স্ক্রিনে নয়।
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]