‘আমি যে মাপের লোক, আমারে সেই মাপের একটা অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাইতি, বুড়ো অস্ত্র দিয়া আমার মানসম্মান শেষ করলি’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন পোস্ট শেয়ার করেন লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম ফরিদ উদ্দিন। তিনি ১০ আগস্ট যৌথ বাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তারের পর কারাগারে রয়েছেন।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে এটি পোস্ট করা হয়। যা পরে সংশোধন করা হয়েছে। এর ঘণ্টাখানেক পর একই আইডি থেকে তাঁর মুক্তির দাবিতে পালেরহাট বাজারে মিছিলের ভিডিওর একটি লিংক দেওয়া হয়।
এ ছাড়া স্ট্যাটাসটি পড়লে মনে হয়, যুবদল নেতা নিজেই এটি পোস্ট করেছেন। কিন্তু কারাবন্দী অবস্থায় সে সুযোগ রয়েছে কি না, তা নিয়ে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা-সমালোচনা। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
নেটিজেনরা এ নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন। একজন লেখেন, ‘অস্ত্র দিয়ে কাউকে ফাঁসাতে হলে ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। মানুষের সম্মানহানি করবেন না প্লিজ।’
স্ট্যাটাসে লেখা হয়, ‘সবাই শেয়ার করবেন-পরকীয়ার টানে ঘরের কোনে অবৈধ মেলামেশা করে জন্ম দেওয়া জারজ সন্তান। তোকে বলছি যেহেতু, আমার বাড়িতে বাংলা অস্ত্র রেখে সেনাবাহিনীকে খবর দিয়া আমারে ফাঁসাইলি, তাতে আমি অনুতপ্ত নয়।
‘আমি জেলা যুবদলের নেতা ছিলাম, আমি একজন ঠিকাদার ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। যেহেতু আমারে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাইলি, তাহলে আমি যেই মাপের লোক, আমারে সেই মাপের একটা অস্ত্র দিয়ে ফাঁসাইতি।
‘যেমন বিদেশি পিস্তল, শটগান বা অন্যান্য অস্ত্র দিয়া ফাঁসাইতি। আমার দুঃখ লেদ মেশিনে বানানো ইয়ার গানের পাইপ দিয়া কাঠের বাঁট লাগানো নতুন রং করানো দুই হাজার টাকার অস্ত্র দিয়া আমারে ফাঁসাইলি। এটার জন্য আমি লজ্জিত ৷ এই বুড়ো অস্ত্র দিয়া আমার মানসম্মান শেষ করলি।
বি. দ্র. আমি সেনাবাহিনীর উদ্দেশ্যে বলছি-আপনারা জানেন, এই অস্ত্র আমার নয়। যে লোক আপনাদের ইনফরমেশন দিয়েছে বা অস্ত্র এনে রেখেছে তাকে আপনারা চেনেন। তার কাছে বিদেশি পিস্তলসহ অন্যান্য দামি অস্ত্র আছে, তাকে গ্রেপ্তার করুন আরও অনেক অস্ত্র পাবেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর জেলা কারাগারের জেলার (ভারপ্রাপ্ত) নুর মোহাম্মদ সোহেল বলেন, কারাগারে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ নেই। অস্ত্র মামলায় ফরিদ রিমান্ডে ছিলেন। গত রোববার (১৭ আগস্ট) তাঁকে রিমান্ডে নেয় সদর থানা-পুলিশ। সেখান থেকে আদালতের মাধ্যমে রাত ৯টার দিকে তাঁকে কারাগারে আনা হয়েছে। তিনি স্ট্যাটাস দিয়ে থাকলে বাইর থেকে দিয়েছেন।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ফরিদ এক দিনের রিমান্ডে ছিলেন। দুপুর ১২টার পরে তাঁকে হাজতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে ও হাজতে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ নেই। হয়তো মোবাইল তাঁর পরিবারের কাছে রয়েছে, পরিবারের লোকজনই স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১০ আগস্ট রাতে সদর উপজেলার পালেরহাট এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে যুবদল নেতা ফরিদ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁর বাড়ি থেকে একনলা একটি বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে।
তাঁর বিরুদ্ধে হত্যাসহ ১৪টি মামলা রয়েছে। পরদিন ১১ আগস্ট অস্ত্র আইনে আরও একটি মামলায় তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। একই দিন বিকেলে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় যুবদল।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]