জরায়ুর ভেতরের আস্তরণ এন্ডোমেট্রিয়ামে কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি ঘটলে যে ক্যানসার হয়, তা-ই জরায়ু ক্যানসার বা এন্ডোমেট্রিয়াম ক্যানসার। এটি সাধারণত মেনোপজের পর বয়সী নারীদের বেশি দেখা যায়। সময়মতো শনাক্ত করা গেলে এই ক্যানসারের চিকিৎসা সম্ভব এবং অনেক ক্ষেত্রে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন।
জরায়ুর ক্যানসার কেন হয়
বয়স, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অতিরিক্ত ওজন, কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং পরিবারে জরায়ু ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এতে জরায়ুর আস্তরণের কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় এবং স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ হারায়।
ঝুঁকিতে যাঁরা
জরায়ুর ক্যানসার কেন হয়
বয়স, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, অতিরিক্ত ওজন, কিছু দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং পরিবারে জরায়ু ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। এতে জরায়ুর আস্তরণের কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায় এবং স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রণ হারায়।
ঝুঁকিতে যাঁরা
এ রোগের উপসর্গ
সাধারণ উপসর্গ হলো, মেনোপজের পর হঠাৎ যোনিপথে রক্তপাত শুরু হওয়া। এ ছাড়া দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, নিচের পেটে ব্যথা, কিংবা দীর্ঘদিন ধরে থাকা ঝুঁকির সঙ্গে এসব উপসর্গ মিলে গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রকারভেদ
হিস্টোপ্যাথলজি বা টিস্যু পরীক্ষা অনুযায়ী জরায়ুর ক্যানসার দুই ধরনের—
প্রথম ধরন: এন্ডোমেট্রয়েড অ্যাডিনোকার্সিনোমা। এটি তুলনামূলক ধীরে ছড়ায়।
দ্বিতীয় ধরন: নন-এন্ডোমেট্রয়েড অ্যাডিনোকার্সিনোমা। এটি দ্রুত ছড়ায় এবং বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
আণবিক পর্যায়ের পরীক্ষায় এই ক্যানসার কয়েকভাবে ধরা পড়ে। যেমন পোল মিউটেশন বা নির্দিষ্ট জিনের পরিবর্তন, ডিএমএম আর ত্রুটি বা ডিএনএ মেরামতের ঘাটতি, পি-৫৩ মিউটেশন বা ক্যানসার নিয়ন্ত্রণকারী জিনের ত্রুটি এবং অনির্দিষ্ট ফলাফল, যেখানে ক্যানসারের ধরন স্পষ্টভাবে চিহ্নিত হয় না।
রোগের পর্যায়
প্রথম ধাপ: ক্যানসার শুধু জরায়ুর ভেতর সীমাবদ্ধ থাকে।
দ্বিতীয় ধাপ: ক্যানসার জরায়ু থেকে জরায়ুমুখে (সার্ভিকস) পৌঁছায়।
তৃতীয় ধাপ: ক্যানসার ডিম্বাশয় বা যোনিতে ছড়িয়ে পড়ে।
চতুর্থ ধাপ: ক্যানসার মূত্রথলি বা রেকটাম পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
রোগ শনাক্তে টিভিএস বা ট্রান্সভাজাইনাল সোনোগ্রাফি, এন্ডোমেট্রিয়াম থেকে নমুনা সংগ্রহ, ফ্র্যাকশনাল কিউরেটেজ, হিস্টেরোস্কপি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। রোগের বিস্তার বোঝার জন্য পেলভিক এমআরআই বা পুরো পেটের সিটি স্ক্যানও করা হতে পারে।
চিকিৎসা
প্রাথমিক পর্যায়ে কার্যকর চিকিৎসা হলো হিস্টেরেকটোমি, অর্থাৎ জরায়ু অপসারণের অস্ত্রোপচার। ক্যানসারের বিস্তার ও রোগীর অবস্থা অনুযায়ী এটি সাধারণ বা র্যাডিক্যাল হতে পারে। উন্নত পর্যায়ে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, হরমোন থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি এবং লক্ষ্যভিত্তিক চিকিৎসা (টার্গেটেড থেরাপি) প্রয়োগ করা হয়। চিকিৎসা শুরু করার আগে রোগীর বয়স, শারীরিক সক্ষমতা ও ক্যানসারের স্টেজ বিবেচনা করা হয়।
এই রোগের ঝুঁকি কমাতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো হরমোন থেরাপি নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া মাসিকের সময় বা যোনি থেকে অস্বাভাবিক রক্তস্রাব হলে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া জরুরি।
লেখক
স্ত্রীরোগ, প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ ক্যানসার ও ল্যাপারোস্কোপিক সার্জন, কনসালট্যান্ট, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা
চেম্বার: আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০, ঢাকা
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]