মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চান, ভবিষ্যতে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ ও শান্তি নিয়ে আলোচনার জন্য তাঁদের সম্ভাব্য বৈঠকে তিনি উপস্থিত থাকুন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের উপস্থাপক শন হ্যানিটিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “তাঁরা দুজনেই আমাকে সেখানে চান। দুজনেই আমাকে চান, আর আমি থাকবও।”
তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, স্বল্প সময়ের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিনি কতটা আশাবাদী। জবাবে ট্রাম্প বলেন, “মোটামুটি স্বল্প সময়ের মধ্যেই, হ্যাঁ।”
এ সময় ট্রাম্প স্বীকার করেন, তিনি ভেবেছিলেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধই হবে সমাধানের জন্য সবচেয়ে সহজ সংকট। কিন্তু বাস্তবে সেটাই সবচেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
ট্রাম্প বলেন, “আমি ভেবেছিলাম এগুলোর মধ্যে এটা সবচেয়ে সহজ হবে। কিন্তু আসলে এটাই সবচেয়ে কঠিন প্রমাণিত হলো।”
এদিকে, আলাস্কায় অনুষ্ঠিত ট্রাম্প–পুতিনের বৈঠক কোনো চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে ট্রাম্প এই বৈঠককে ‘ফলপ্রসূ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। দীর্ঘ আলোচনার পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “আমি বিশ্বাস করি আমাদের বৈঠক খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। বহু বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। তবে কয়েকটি বড় ইস্যুতে এখনো পুরোপুরি সমঝোতা হয়নি, যদিও আমরা কিছুটা অগ্রগতি করেছি।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “চুক্তি না হলে কোনো চুক্তিই নেই। আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই ন্যাটোকে ফোন করব। যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা প্রয়োজন মনে করি, তাঁদের সবার সঙ্গেই কথা বলব। আর অবশ্যই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকেও আজকের বৈঠকের বিষয় জানাব।”
ট্রাম্প আরও জানান, শেষ পর্যন্ত ইউক্রেন ও পশ্চিমা মিত্রদের মতামতই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত এটা তাঁদের ওপর নির্ভর করছে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ আর ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু অসাধারণ মানুষ এখানে এসেছেন। তাঁদের আলোচনার সঙ্গেও জেলেনস্কিদের একমত হতে হবে।”
পুতিন বৈঠক শেষে বক্তব্য শুরু করেন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার ঐতিহাসিক সম্পর্কের প্রশংসা দিয়ে। তিনি উল্লেখ করেন, আলাস্কার প্রতীকী স্থানেই এই আলোচনা হয়েছে।
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি ‘প্রতিবেশী’ আখ্যা দিয়ে স্বীকার করেন, দুই দেশের সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে।
পুতিন বলেন, “দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য এটা ছিল খুব কঠিন সময়। সত্যি বলতে, ঠান্ডা যুদ্ধের পর এটাই সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। আমি মনে করি, এটা আমাদের দেশগুলোর জন্য এবং পুরো বিশ্বের জন্যই ক্ষতিকর। আজ হোক বা কাল হোক আমাদের এই পরিস্থিতি বদলাতে হবে। মুখোমুখি সংঘাত থেকে আলোচনার পথে যেতে হবে। আর এই ক্ষেত্রে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের ব্যক্তিগত বৈঠক অনেক দিন ধরেই প্রয়োজন ছিল।”
তিনি আরও জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর “খুব ভালো ও সরাসরি যোগাযোগ” আছে। এর আগে ফোনালাপে তাঁদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন পুতিন।
পুতিন যোগ করেন, “আমরা ভালোভাবেই জানি, অন্যতম প্রধান ইস্যু ছিল ইউক্রেনকে ঘিরে পরিস্থিতি।”
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]