সিঙ্গাপুরভিত্তিক ধনকুবের ও হোটেল ব্যবসায়ী ওং বেন সেংকে উপহার কেলেঙ্কারির মামলায় ২৩ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার (২৮ লাখ ৪২ হাজার টাকা) জরিমানা করা হয়েছে। গত বছর তিনি সারা দেশকে নাড়া দেওয়া ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছিলেন।
শুক্রবার বিবিসি জানিয়েছে, ৭৯ বছর বয়সী ওং সিঙ্গাপুরের সাবেক পরিবহনমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম ইস্বরানকে দামি উপহার, বিলাসবহুল ভ্রমণ ও ব্যক্তিগত জেট বিমানে যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছিলেন ওং। সিঙ্গাপুরের একজন মন্ত্রী হিসেবে এই ধরনের উপহার গ্রহণ গুরুতর অপরাধ। পরে এই বিষয়ে তদন্তের সময় ইস্বরানকে গোপনে সহায়তা করার অভিযোগও স্বীকার করেন ওং।
অভিযোগের ভিত্তিতে ওংয়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাত বছর কারাদণ্ডের বিধান থাকলেও বিচারক লি লিট চেং স্বাস্থ্যগত কারণে তাঁকে ‘বিচারিক করুণা’ প্রদর্শন করেন। বর্তমানে ওং এক বিরল ধরনের অস্থিমজ্জা ক্যানসারে (মাল্টিপল মাইলোমা) ভুগছেন। আদালত জানান, উপযুক্ত সাজা তিন মাসের জেল হলেও তা তাঁর জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। সে সময় ওং কাতার ভ্রমণে ইস্বরানকে আমন্ত্রণ জানান এবং সব খরচ বহনের প্রস্তাব দেন। এর মধ্যে হোটেল ও ব্যক্তিগত জেটে দোহা ভ্রমণও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে কাতারে থাকা অবস্থায়ই ওই ভ্রমণ নিয়ে দুর্নীতি দমন ব্যুরো তদন্ত শুরু করলে ইস্বরান ফিরতি যাত্রায় সিঙ্গাপুরগামী একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটের বিজনেস শ্রেণির টিকিটের বিল পরিশোধ করেন।
সিঙ্গাপুরের আইন অনুযায়ী, মন্ত্রীরা উপহার রাখতে পারেন না—যদি না তাঁর বাজারমূল্য সরকারকে পরিশোধ করেন এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকা ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া উপহার অবশ্যই ঘোষণা করতে হয়। বলা হয়ে থাকে—দেশটির রাজনীতিকেরা বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনধারীদের কাতারে থাকেন। আর এই বিষয়টিকেই তাঁদের দুর্নীতি প্রতিরোধের যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে ওং ও ইস্বরান দুজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়, ইস্বরান ৪ লাখ ৩ হাজার সিঙ্গাপুরি ডলারের বেশি মূল্যের ফ্লাইট, হোটেল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ফর্মুলা ওয়ান রেসিংয়ের প্রবেশপত্র (এফ ১ টিকিট) পেয়েছিলেন।
প্রসিকিউটররা বলেন, ওং ইস্বরানের প্রমাণ গোপনের চেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও ইস্বরানের তুলনায় কম দায়ী। কারণ, ইস্বরান একজন মন্ত্রী। ওংয়ের আইনজীবীরা দাবি করেন, পুরো পরিকল্পনাটি ছিল ইস্বরানের। ওং শুধু তাতে সাড়া দিয়েছেন।
১৯৪৬ সালে মালয়েশিয়ায় জন্ম নেওয়া ওং শৈশবে সিঙ্গাপুরে চলে আসেন। ১৯৮০-এর দশকে হোটেল ও সম্পত্তি ব্যবসা শুরু করেন। তিনি সিঙ্গাপুরে ‘ফর্মুলা ওয়ান গ্র্যান্ড প্রিক্স’ আনার অন্যতম উদ্যোক্তা। তাঁর প্রতিষ্ঠান হোটেল প্রপার্টিজ লিমিটেডের (এইচপিএল) অধীনে ফোর সিজনস ও ম্যারিয়টের মতো ব্র্যান্ড পরিচালিত হয়। চলতি বছরের এপ্রিলে স্বাস্থ্যগত কারণে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]