ইন্দোনেশিয়ায় খাদ্যে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে সাড়ে তিনশতাধিক স্কুল শিক্ষার্থী। প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তোর অন্যতম প্রধান প্রকল্প ‘বিনামূল্যে স্কুল খাবার কর্মসূচি’ খাবরে এ বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেন্ট্রাল জাভার সরাগেত শহরের এ ঘটনাটি এ পর্যন্ত এই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় খাদ্য বিষক্রিয়ার ঘটনা। কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, সরাগেত শহরে স্কুল থেকে দেওয়া খাবার খেয়ে মোট ৩৬৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এক স্কুল শিক্ষার্থী রয়টার্সকে জানায়, প্রচণ্ড পেট ব্যথায় রাতে ঘুম ভেঙে যায় তার। সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা আর ডায়রিয়া। প্রথমে সে ভেবেছিল সে একাই অসুস্থ হয়েছে। পরে, সামাজিক মাধ্যমে সহপাঠীদের পোস্ট দেখে বুঝতে পারে স্কুলের দেওয়া খাবারে বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়েছে সে।
অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের দেওয়া খাবারে ছিল টার্মারিক রাইস, ডিম, ভাজা টেম্পে, শসা ও লেটুস পাতার সালাদ, কাটা আপেল এবং এক প্যাকেট দুধ। এই খাবারগুলো একটি কেন্দ্রীয় স্থানে রান্নার পর একাধিক স্কুলে বিতরণ করা হয়।
সরাগেত শহরের সরকারি কর্মকর্তা সিগিট পামুংকাস রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা ওই রান্নাঘর থেকে খাবার বিতরণ সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। ওইদিনের খাবার পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল না আসা পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে।’ সরকার জানিয়েছে, প্রয়োজনে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ তারাই বহন করবে।
জানুয়ারি মাসে এই প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে একাধিক খাদ্য বিষক্রিয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ কর্মসূচির খাবার খেয়ে এ পর্যন্ত এক হাজারের বেশি মানুষ অসুস্থ হয়েছে। এর আগের ঘটনাগুলোর পরই রান্নাঘরের কার্যক্রম এবং খাবার বিতরণের মান উন্নত করার জন্য কাজ করছে বলে জানিয়েছিল সরকারের সরকারের জাতীয় পুষ্টি সংস্থা।
প্রাবোও সুবিয়ান্তোর নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম একটি অঙ্গীকার ছিল স্কুল খাদ্য কর্মসূচি। তিনি দাবি করেছিলেন, বহু-বিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
বিনামূল্যে খাবার কর্মসূচিটি ইতিমধ্যে ১ দশমিক ৫ কোটির বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে। এ বছরের মধ্যে ৮ দশমিক ৩ কোটি মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। যার জন্য এ বছর ১৭১ ট্রিলিয়ন রুপিয়াহ (১০ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার) বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে।
দেশজুড়ে ১৯০টি রান্নাঘরে রান্না হয় এই কর্মসূচির খাবার। যার মধ্যে কিছু পরিচালিত হয় সেনাবাহিনীর দ্বারা, তবে বেশিরভাগই তৃতীয় পক্ষ পরিচালিত। এর আগে চলতি বছরের মে মাসেও পশ্চিম জাভার একটি শহরে খাদ্য বিষক্রিয়ার ঘটনায় ২০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছিল। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে সময় পরীক্ষাগারে খাবারে সালমোনেলা এবং ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গিয়েছিল।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]