শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে হজে নেওয়া যাবে না: ধর্ম উপদেষ্টা


শারীরিক সক্ষমতা না থাকলে কাউকে হজে নেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, কেবল শারীরিকভাবে সুস্থ ব্যক্তিদেরই হজের জন্য নিবন্ধন করাতে হবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় পর্যায়ে হজ ও ওমরাহ ফেয়ার ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হজে যেতে চাওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে হজ এজেন্সির যোগসূত্র তৈরির লক্ষ্যে এই আয়োজন করেছে হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, অসুস্থ ও শারীরিক সক্ষমতা নেই, এমন ব্যক্তিদের হজে নেওয়া হলে সরকারকে বিব্রত হতে হয়। নানা ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ জন্য শারীরিকভাবে অক্ষম ও দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হজের জন্য ফিটনেস সার্টিফিকেট না দেওয়ার জন্য সিভিল সার্জনদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ও শারীরিক সক্ষমতাবিহীন ব্যক্তিদের হজে না নেওয়ার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করেন তিনি।
খালিদ হোসেন বলেন, ‘এ বছর আমরা একটি সুন্দর হজ উপহার দিতে পেরেছি। এরই মধ্যে ২০২৬ সালের হজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২০২৬ সালের হজ গতবারের চেয়ে আরও উন্নত হবে।’
হজ ও ওমরাহ মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, হজ ও ওমরাহ মেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে হজ এজেন্সির সঙ্গে হজে যেতে চাওয়া ব্যক্তিদের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে। হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাঁদের সামর্থ্য অনুসারে হজ প্যাকেজ বাছাই করতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘হাবের সঙ্গে আমার মন্ত্রণালয়ের কোনো বিরোধ নেই। আমরা পারস্পরিক সম্মান, মর্যাদা ও ভ্রাতৃত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতেও আমরা হজযাত্রীদের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করে যাব।’
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হাবকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন উপদেষ্টা।
হজ এজেন্সির উদ্দেশে খালিদ হোসেন বলেন, অনেক এজেন্সি হজযাত্রীদের ব্যাগে মাদকদ্রব্যসহ সৌদি আরবের অননুমোদিত দ্রব্যাদি নিয়ে যায়। অনেকে দেশে ফেরার সময় হাজিদের মাধ্যমে অবৈধভাবে সোনা নিয়ে আসেন। এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়।
এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে অনুরোধ করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, হজযাত্রী নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় দালালদের দৌরাত্ম্য আছে। এদের কারণে হজের খরচ বেড়ে যায়। আবার হজযাত্রীদের প্রতারিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে থাকে।
হজ গমনেচ্ছু ব্যক্তিদের এজেন্সির মালিক বা তাঁদের বৈধ প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করে হজে যাওয়ার অনুরোধ করেন তিনি। এ ছাড়া হজ এজেন্সির সঙ্গে হজযাত্রীদের চুক্তি সম্পাদন এবং তাঁদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
এর আগে হজ ও ওমরাহ ফেয়ার ২০২৫ উপলক্ষে হাবের মুখপত্র ‘হজ বার্তা’র মোড়ক উন্মোচন করেন উপদেষ্টা।
তিন দিনব্যাপী এ মেলায় মোট ১৫৪টি স্টল রয়েছে। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়, হজ এজেন্সি এবং হজ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যাংকগুলো এই মেলায় হজ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কার্যক্রম ও তথ্যসেবা প্রদর্শন করছে।
এ ছাড়া হজের প্রাথমিক নিবন্ধনের সুযোগ রয়েছে মেলার স্টলগুলোতে।
হাবের সভাপতি সৈয়দ গোলাম সরওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ধর্মসচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, ঢাকায় সৌদি দূতাবাসের উপমিশনের প্রধান ইব্রাহিম আবদুল্লাহ আল-আহমারি ও হাবের মহাসচিব ফরিদ আহমদ মজুমদার।
ক্রাইম জোন ২৪