রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চকরাজাপুর ইউনিয়নে পদ্মার আকস্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে শত শত হেক্টর ফসলি জমি। এতে প্রায় ৬০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে বহু বাড়িঘর। ফসল হারিয়ে দিশেহারা কৃষকেরা এখন কাঁচা ধান গরুর খাবার হিসেবে কেটে নিচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, চকরাজাপুর ইউনিয়নের মাঠগুলোতে এখন শুধু পানি আর পানি। দূরে দেখা গেল গলাপানিতে নেমে দুই নারী-পুরুষ কাঁচা ধান কাটছেন। তাঁরা হলেন চায়না বেগম (৩৫) ও তাঁর স্বামী শমশের আলী (৪০)। শমশের আলী জানান, ২৫ হাজার টাকা বিঘা হিসেবে পাঁচ বিঘা জমিতে আউশ ধান চাষ করেছিলেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ‘কাঁচা ধান গরুর জন্য কেটে নিচ্ছি। এবার আমরা কী খেয়ে বাঁচব, সেই চিন্তায় মরে যাচ্ছি।’
নীচ পলাশী ফতেপুর মাঠে সবচেয়ে বেশি ফসলহানি হয়েছে। যাঁদের ধান কিছুটা পেকেছে, তাঁরা সেটা কাটতে গিয়ে শ্রমিকের সংকটে পড়েছেন। এখন একজন শ্রমিক এক বেলা ধান কাটার জন্য নিচ্ছেন ৮০০ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মজিবর শিকদার ১০ বিঘা পেঁপে বাগান করেছিলেন, যা এখন কোমরপানিতে তলিয়ে গেছে। বাগানে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। সবকিছু দিয়ে এই বাগান করেছিলাম।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনিয়নের পলাশী ফতেপুর, কালিদাসখালী, আতারপাড়া, চৌমাদিয়া এবং দিয়াড়কাদিরপুরের প্রায় ৬০০ বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়সহ প্রায় ৫০টি পরিবার নদীভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, ‘উপজেলার ৭৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হচ্ছে এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাম্মী আক্তার জানান, প্রাথমিকভাবে ২২০টি পরিবার পানিবন্দী হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ‘আজ (বুধবার) তাঁদের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে। পরে বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]