ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট থেকে রস্টন চেজের ডিরেক্ট থ্রোতে ভাঙল স্টাম্প। তৃতীয় আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার আগেই প্রধান কোচ ড্যারেন স্যামি শুরু করলেন উদযাপন। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, পাকিস্তানের আবরার আহমেদ স্ট্রাইকপ্রান্তে পৌঁছানোর আগেই ভেঙে গেছে স্টাম্প। তাতেই ফুরোল ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩৪ বছরের অপেক্ষা।
১৯৯১ সালে পাকিস্তান সফরে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় উইন্ডিজের কাছে হয়ে দাঁড়ায় সোনার হরিণ। ১৯৯১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১১ ওয়ানডে সিরিজের মধ্যে পাকিস্তান জিতেছে ১০টিতে। একটি সিরিজ ড্র হয়েছে। অবশেষে গতকাল শাই হোপের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৪ বছর পর ওয়ানডে সিরিজ জিতল পাকিস্তানের বিপক্ষে। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে ২০২ রানে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১-১ সমতায় থেকে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ গতকাল খেলতে নামে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ত্রিনিদাদে ২৯৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ৮.২ ওভারে ৪ উইকেটে ২৩ রানে পরিণত হয় পাকিস্তান। উইন্ডিজ পেসার জেইডেন সিলসের আগুনে বোলিংয়ে সাইম আইয়ুব, আব্দুল্লাহ শফিক, মোহাম্মদ রিজওয়ান, বাবর আজম—এই চার ব্যাটার পাওয়ার প্লের আগেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছেন। বাবর (৯) ছাড়া প্রথম সারির অন্য তিন ব্যাটার রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
পাকিস্তানের বিপর্যস্ত অবস্থায় ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন হাসান নাওয়াজ। ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ওয়ানডেতে অপরাজিত হাসানকে নিয়ে পাকিস্তানি ভক্ত-সমর্থকেরা কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছিলেন। ত্রিনিদাদে গতকাল পঞ্চম উইকেটে সালমান আলী আগা ও নাওয়াজ ৬৭ বলে গড়েন ৩৮ রানের জুটি। ২০তম ওভারের তৃতীয় বলে নাওয়াজকে স্টাম্পিং করে জুটি ভাঙেন গুড়াকেশ মোতি। নাওয়াজ এবার ৪০ বলে করেন ১৩ রান। কোনো বাউন্ডারি মারতে পারেননি।
নাওয়াজের বিদায়ের পর দ্রুত পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে যায়। ৩১ রানে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে রিজওয়ানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ২৯.২ ওভারে ৯২ রানে অলআউট হয়ে যায়। তাতেই উইন্ডিজ সিরিজ জিতে যায় ২-১ ব্যবধানে। সালমানের ৩০ রানই সফরকারীদের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান। উইন্ডিজের সিলস ৭.২ ওভারে ১৮ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট। ওয়ানডেতে এটা তাঁর সেরা বোলিং। এই সংস্করণে এবারই প্রথম তিনি ইনিংসে পেয়েছেন ৫ উইকেট।
ত্রিনিদাদে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক রিজওয়ান। প্রথমে ব্যাটিং পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর একটা পর্যায়ে ছিল ৪০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৫ রান। এখান থেকেই তাণ্ডব চালানো শুরু করে উইন্ডিজ। শেষ ১০ ওভারে ২ উইকেটে ১১৯ রান যোগ করে ক্যারিবীয়রা। সপ্তম উইকেটে জাস্টিন গ্রিভসের সঙ্গে অধিনায়ক শাই হোপ ৫০ বলে ১১০ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটি গড়েছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ঘরের মাঠে সপ্তম উইকেটে এটা সর্বোচ্চ রানের জুটি।
শেষের তাণ্ডবে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯৪ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইনিংস সর্বোচ্চ ১২০ রান করে অপরাজিত থাকেন হোপ। উইন্ডিজ অধিনায়ক ৯৪ বলের ইনিংসে মেরেছেন ১০ চার ও ৫ ছক্কা। পাকিস্তানের নাসিম শাহ ও আবরার পেয়েছেন দুটি করে উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হোপ ৯৪ বলে ১২০ রান করে পেয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার। তিন ম্যাচের সিরিজে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হয়েছেন সিলস।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]