দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতিতে দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক অনুশীলনকে উৎসাহিত করার তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।
আজ মঙ্গলবার ঢাকায় জাতিসংঘের উদ্যোগে ওশান সেন্টার্স, বাংলাদেশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁরা এ তাগিদ দেন। এ নিয়ে সংস্থাটি মোট সাতটি দেশে এমন কেন্দ্র চালু করল। অন্য দেশগুলো হলো ব্রাজিল, ঘানা, কেনিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইন।
বেসরকারি খাতে সহায়তা দিতে জাতিসংঘ গ্লোবাল কমপ্যাক্ট আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা লয়েডস রেজিস্টার ফাউন্ডেশনের মধ্যে অংশীদারত্বের মাধ্যমে এই কেন্দ্রগুলো প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৌশলগতভাবে অবস্থিত এসব কেন্দ্র যেসব চ্যালেঞ্জ খুঁজে পাবে, তা স্থানীয়ভাবে পরিচালিত সমাধানকে উৎসাহিত করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। দৈনিক আজকের পত্রিকা ছিল মিডিয়া পার্টনার।
তিনি বলেন, দেশে যে মাছ আহরণ করা হয়, তার ৮৭ ভাগ মিঠাপানির। আর মাত্র ১৩ ভাগ সাগরের। অথচ সাগরে মাছ ধরা, মাছ চাষ, শৈবাল আহরণ ও সমুদ্র পরিবহন খাতে বড় রকম অগ্রগতির সুযোগ রয়েছে।
সমুদ্র অর্থনীতিবিষয়ক গবেষক রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) এম খুরশেদ আলম বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু দেশের অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাগরের সম্পদ ও সম্ভাবনা কাজে লাগানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। দেশের উপকূলরেখা থেকে ৬৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ সমুদ্রসীমার অতি সামান্য অংশে মাছ ধরা হয়। বন্দরে বছরে প্রায় ৪ হাজার জাহাজ মালামাল পরিবহন করে। এর মধ্যে দেশীয় জাহাজ মাত্র ১৫০টির মতো।
সমুদ্রসম্পদ কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে বিরাজমান প্রতিবন্ধকতা অপসারণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু হেনা মো. ইউসুফ নিরাপত্তা সংস্কৃতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পাশাপাশি সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণে সরকার, গবেষক ও বেসরকারি অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টিকারী নীতিগত ফাঁকগুলো তুলে ধরেন।
মেরিন ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এনাম চৌধুরী সাগরে মাছ ধরা-শিল্প বিকাশের জন্য নিরাপত্তা ও অন্যান্য সহযোগিতা নিশ্চিতের অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন (অব.) সাঈদ মাহমুদ হাসান বলেন, সমুদ্রবন্দরগুলোকে নানা ধরনের সমস্যা মোকাবিলার সক্ষমতা ও আন্তর্জাতিক পরিবেশগত সম্মতি মান বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতিসংঘ গ্লোবাল কমপ্যাক্ট নেটওয়ার্কের নির্বাহী পরিচালক শাহামিন জামান, লয়েডস রেজিস্টার ফাউন্ডেশনের পরিচালক অ্যালেক্স স্টিট, ওশান সেন্টারস, বাংলাদেশের প্রধান কমোডর (অব.) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য রিয়ার অ্যাডমিরাল ড. খন্দকার আখতার হোসেন, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ওশান গভর্ন্যান্সের পরিচালক অধ্যাপক ড. কে এম আজম চৌধুরী, নৌপরিবহন বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) এম শফিকুল্লাহ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রোকসানা জাহান ও এলানর সোলার সলিউশনের চেয়ারম্যান কমোডর (অব.) শরীফ উদ্দিন ভূঁইয়া।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]