বিমান বিধ্বস্তের সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোচিং বাণিজ্য বন্ধসহ আট দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও আহতদের স্বজনেরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন রেলস্টেশন ডিপোর সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করা হয়।
চোখে কান্না ও মুখে ক্ষোভের ছাপ নিয়ে বিক্ষোভে ‘ফুলগুলো সব পুড়ল কেন, জবাব চাই, বিচার চাই’, ‘বাচ্চাগুলো পুড়ল কেন, জবাব চাই, বিচার চাই’, ‘ফুল পাখি সব পুড়ল কেন জবাব চাই, বিচার চাই’ সহ নানান স্লোগান দেন তারা।
মানববন্ধন থেকে স্বজনরা আট দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো—সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত করতে হবে, সারা বাংলাদেশে মাইলস্টোন স্কুলসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে, সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি নিহত বাচ্চার জন্য পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ (জরিমানা) এবং প্রতি আহত বাচ্চার জন্য ১ কোটি টাকা দিতে হবে।
এছাড়াও স্কুলের পক্ষ থেকে প্রত্যেক নিহত শিশুর জন্য ২ কোটি এবং প্রতিটি আহত বাচ্চার জন্য ১ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে, রানওয়ে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্থান পরিবর্তন করতে হবে (অন্যথায় রানওয়ের স্থান পরিবর্তন করতে হবে), কোচিং ব্যবসার মূল হোতা স্কুল শাখার প্রধান শিক্ষিকাকে (মিস খাদিজা) ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাঁর বিচার করতে হবে, স্কুলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখাতে হবে, এবং বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জনহীন জায়গায় করতে হবে।
মানববন্ধনকালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সায়মা আক্তারের মা রীনা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ে বলত, মা কোচিং না করালে মিস আদর করে না। আমি মেয়েকে কোচিংয়ে দিলাম। সেই কোচিংয়ের কারণেই আমার মেয়ে মারা গেল। এই কোচিংই আমার মেয়ের সর্বনাশ করল।’
নিহত উম্মে আফিয়ার মামা সাব্বির বলেন, ‘আজ অনেক দিন হলো। কিন্তু এ ঘটনার কী তদন্ত হলো, কী বিচার হলো আমরা জানতে পারিনি।’
অভিভাবক লিয়ন বলেন, ‘এই স্কুলে কোচিং বাণিজ্য হতো, এটা সবাই জানে। এই কোচিং করার কারণে বাচ্চাগুলো মারা গেল। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। এই ধরনের কাজ যেন আর না হয় এমন নীতিমালা চাই।’
সানজিদা নামের এক অভিভাবক অভিযোগ করেন, ‘স্কুল আমাদের বাচ্চাদের ফ্রিতে পড়াশোনা করানোর লোভ দেখাচ্ছে। আমরা এই স্কুল বন্ধ চাই। আমার ভাইয়ের মেয়ে মারা গেছে। আমি বিদেশ থেকে এসে মরদেহ দেখতে পারিনি। এ দেশে এর বিচার না হলে দরকার হলে বিদেশ থেকে মানবাধিকারের লোক আনব।’
গত ২১ জুলাই দুপুরে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩৫ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক নিহত এবং প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হন। ওই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতেই এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বিমান বিধ্বস্তের ১২ দিন পর অর্থাৎ গত ৩ আগস্ট পুনরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম শুরু হয়।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]