ডলফিনকে প্রাণিজগতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রজাতির একটি হিসেবে গণ্য করা হয়। সমুদ্রজীব বিজ্ঞানীদের মতে, ডলফিন শুধু শিকার ধরতে নয়, নিজেদের আনন্দ কিংবা কৌতূহল মেটাতেও নানা ধরনের বুদ্ধি খাটায়। এবার সেই বুদ্ধিমত্তার নতুন এক দিক উঠে এসেছে বিবিসি ওয়ানের নতুন তথ্যচিত্রে—যেখানে দেখা গেছে, তরুণ ডলফিনেরা পাফার মাছ ব্যবহার করে ‘নেশা’ করছে।
বিবিসির ‘ডলফিনস: স্পাই ইন দ্য পড’ নামের ধারাবাহিক তথ্যচিত্রের জন্য ধারণ করা বিরল কিছু দৃশ্যে দেখা যায়, একদল তরুণ ডলফিন খুব সাবধানে এক ধরনের পাফার মাছ ধরে খেলছে। পাফার মাছকে উত্তেজিত করলে এটি শরীর থেকে এক ধরনের স্নায়বিক বিষ (নিউরোটক্সিন) ছাড়ে। বেশি মাত্রায় এই বিষ প্রাণঘাতী হতে পারে, তবে অল্প পরিমাণে এটি এক ধরনের নেশার মতো প্রভাব ফেলে।
তথ্যচিত্রে দেখা যায়, ডলফিনগুলো পাফার মাছটিকে আলতো করে কামড়ায় এবং একটি অপরটির দিকে পাফার মাছটিতে ঠেলে দেয়। ঠিক এর পরেই তাদের আচরণ বদলে যায়, তারা পানির ওপর নাক তুলে ধীরে ভেসে থাকে, যেন নিজেদের প্রতিবিম্বে মুগ্ধ হয়ে গেছে। তাদের চোখ-মুখে ঘোরের ছাপ স্পষ্ট।
তথ্যচিত্র সিরিজটির প্রযোজক ও প্রাণিবিজ্ঞানী রব পিলি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমসকে বলেন, ‘এটি ছিল তরুণ ডলফিনদের সচেতনভাবে এমন কিছুর সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা যা তাদের ওপর নেশার মতো প্রভাব ফেলে। (পাফার) মাছটিকে আলতো করে কামড়ে, তারপর একে অপরের দিকে ঠেলে দিয়ে তারা যেন সঠিক মাত্রায় বিষ বের করে আনার কৌশল শিখে ফেলেছে। এরপরই তারা অদ্ভুত আচরণ শুরু করল—ঘোরের মধ্যে পানির ওপর ভাসছিল। বিষয়টি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, কয়েক বছর আগে ছড়িয়ে পড়া সেই অদ্ভুত ধারা, যেখানে মানুষ নেশা করার জন্য ব্যাঙের শরীর চাটত।’
তথ্যচিত্র নির্মাতারা কৃত্রিম কচ্ছপ, মাছ ও স্কুইডের ভেতরে লুকানো বিশেষ ক্যামেরা ব্যবহার করে ডলফিনদের প্রাকৃতিক আচরণ ধারণ করেছেন। ৯০০ ঘণ্টা ফুটেজের মধ্যে পাফার মাছ ব্যবহার করার এই দৃশ্য ছিল অন্যতম আকর্ষণ।
ক্রাইম জোন ২৪
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]