[ad_1]
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অন্যান্য ফার্নিচারের পাশাপাশি বাঁশের ফার্নিচারও ক্রেতারা বেশ পছন্দ করছেন। বাজারে বিভিন্ন ডিজাইন ও কারুকার্যসম্পন্ন কাঠ ও বেতের ফার্নিচার বহু আগে থেকেই পাওয়া গেলেও এখন বাঁশের ফার্নিচারও পাওয়া যায়। স্থানীয় পাহাড়-টিলা থেকে সংগৃহীত বাঁশ দিয়ে তৈরি এসব ফার্নিচারের চাহিদা বাড়ছে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও স্থানীয়দের কাছে। বিশেষ করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন রিসোর্ট বাঁশের ফার্নিচার দিয়ে সাজানো হয়েছে।
কমলগঞ্জের আমির হোসেন সিরাজ নামে এক ব্যবসায়ী ২০০৩ সালে কয়েক হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ও মাত্র একজন শ্রমিক দিয়ে কারখানা শুরু করেন। এখন সেখানে নিয়মিত কাজ করেন ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক।
উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের বড়চেগ গ্রামের আমির হোসেন সিরাজের বাঁশের ফার্নিচারের কারখানা ও বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি নিজ গ্রামে গড়ে তুলেছেন এই বাঁশ-বেতের আধুনিক ফার্নিচারের কারখানা। বড় বড় স্থানীয় ফার্নিচারের দোকানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাঁশের দৃষ্টিনন্দন ফার্নিচার বানাচ্ছেন তিনি। গ্রাম থেকেই তিনি সারা দেশসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে বিক্রি করছেন তার তৈরি বাঁশের ফার্নিচার। নিজ বাড়িতে বাঁশ দিয়ে একটি দোতলা বাড়িও বানিয়েছেন। বিশেষ করে রিসোর্ট ও বিভিন্ন হোটেল মালিকেরা বাঁশের ফার্নিচার অর্ডার করে নিয়ে যান।
সিরাজ কুটিরশিল্পে আধুনিক ডিজাইনের সোফাসেট, খাট, ডাইনিং টেবিল, চেয়ার, আলনা, ড্রেসিং টেবিল, দরজা, জানালা, ফুলের টব, রিডিং টেবিল, টেবিল ল্যাম্প, পেন স্ট্যান্ড বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়। এ ছাড় রিসোর্ট, কটেজের ফার্নিচার, হোটেল-রেস্টুরেন্ট-অফিসের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন ধরনের চাহিদাসম্পন্ন আসবাবপত্র তৈরি করে দেওয়া হয়।
সিরাজ কুটিরশিল্পে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আকার অনুযায়ী প্রথমে বাঁশকে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হয়। শুকানোর পর পোকায় না ধরার জন্য ওষুধ দিয়ে আবার শুকাতে হয়। একটি বড় ফার্নিচার তৈরি করতে তিন থেকে চার সপ্তাহ লেগে যায়। ছোট আইটেমগুলো সবচেয়ে বেশি চলে। বেশির ভাগ মানুষ শখের বসে এগুলো কিনে নিয়ে যায়। যত দিন যাচ্ছে, মানুষ বাঁশের ফার্নিচারের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, সিরাজ তাঁর একান্ত প্রচেষ্টায় এই শিল্প গড়ে তুলেছেন। তুলনামূলকভাবে বাঁশের ফার্নিচারের দাম কম। বিশেষ করে পর্যটন এলাকা থাকায় অনেক মানুষ এখানে ঘুরতে এসে কেনাকাটা করেন। এ জন্য এই কুটিরশিল্প ভালোই চলছে। এখানে এলাকার অনেক যুবকের কর্মসংস্থানও হয়েছে।
আমির হোসেন সিরাজ আজকের পত্রিকাকে বলেন, এখন থেকে প্রায় দুই দশক আগে শুরু করেছিলাম বাঁশের ফার্নিচারের কারখানা। প্রথম দিকে সাড়া কম পেলেও গত কয়েক বছর ধরে খুব ভালোই চলছে। জেলার বিভিন্ন পাহাড় থেকে প্রথমে বাঁশ সংগ্রহ করি আমরা। পরে এগুলো শুকিয়ে ফার্নিচার তৈরি করতে হয়। পর্যটন এলাকা থাকায় এখানে দেশি ক্রেতার পাশাপাশি অনেক বিদেশি ক্রেতা আসেন। অনলাইন ও কুরিয়ার সার্ভিসে বিক্রি হয় ফার্নিচার। কেউ কেউ আবার বিদেশেও পাঠান। বিদেশে এর প্রচুর চাহিদাও আছে। সবকিছু মিলে বছরে প্রায় ৪০-৫০ লাখ টাকার ফার্নিচার বিক্রি হয়। তিনি আরও জানান, কাঠের মধ্যে পোকায় না ধরার জন্য বিদেশ থেকে একধরনের তেলজাতীয় মেডিসিন ব্যবহার করা হয়, যার কারণে বাঁশের ফার্নিচারগুলো এখন দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং অতি সহজে নষ্ট হয় না। সহযোগিতা পেলে এই কুটিরশিল্পকে অনেক বড় করার স্বপ্ন রয়েছে বলে তিনি জানান।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]