চুরির মামলার বাদী কারাগারে, আসামি মুক্ত


জামালপুরের ইসলামপুরে মোটরসাইকেল চুরির মামলার আসামিকে থানা থেকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। অপরদিকে মব সৃষ্টি করে ওই আসামিকে নিজের বসতঘরে মারধরের অভিযোগে মামলার বাদীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া মোটরসাইকেল চুরির মামলা আসামির নাম নবীন মিয়া (৩০)। তিনি উপজেলার গাইবান্ধা ইউনিয়নের বটচর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে। মোটরসাইকেল চুরির মামলার বাদীর নাম মিজানুর রহমান ওরফে মিজান (২৫)। তিনি একই গ্রামের ওয়াহেদ আলীর ছেলে।
আজ শুক্রবার (৮ আগষ্ট) বিকেলে মব সৃষ্টি করে মারধরের অভিযোগে ইসলামপুর থানায় করা মামলায় মোটরসাইকেল চুরির মামলার বাদী মিজানকে পুলিশ জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির করলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সংশ্লিষ্ট বিচারক।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মামলার বাদী মিজানের বসতঘর থেকে মারধরের শিকার নবীনকে উদ্ধার করে পুলিশ। একই সঙ্গে মিজানকেও আটক করা হয়।
এর আগে ওই দিন বিকেলে উপজেলার চরপুটিমারী ইউনিয়নের বেনুয়ারচ বাজার থেকে মিজানসহ তাঁর লোকজন নবীনকে ধরে বাড়িতে নিয়ে মারধর করেন। খবর পেয়ে ইসলামপুর থানা-পুলিশ গভীর রাতে নবীনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করায়। একই সময় মব সৃষ্টির ঘটনায় মিজানকে আটক করে পুলিশ। পরে নবীনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে মিজানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ নিয়ে নবীনের বড় বোন বাদী হয়ে মিজানকে প্রধান আসামি দিয়ে ছয়জনের নামোল্লেখে থানায় মামলা করেছেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মিজানকে পুলিশ আদালতে সোপর্দ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ জুলাই গভীর রাতে মিজানুরের বসতঘরের দরজা কেটে কে বা কারা তাঁর একটি মোটরসাইকেল চুরি করে। এ নিয়ে ওই দিন অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে ইসলামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন মিজান। পরে গত ২৯ জুলাই মিজান বাদী হয়ে নবীন, তাঁর স্ত্রী রত্না বেগম ও মাহেন্দ্রপুরের আব্দুর রহমানের ছেলে আলমগীরকে আসামি দিয়ে জামালপুর আদালতে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মিজানের বড় ভাই সোনা মিয়া বলেন, ‘মোটরসাইকেল চুরির আসামি নবীনকে ছেড়ে দিয়ে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধ মামলা দিয়ে মামলার বাদী মিজানকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। আমরা নবীনকে মারধর করিনি। তবে নবীন চোর হওয়ায় উত্তেজিত জনতা তাকে চড়থাপ্পড় দিয়েছে।’
জানতে চাইলে নবীন মিয়া বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেল চুরি করিনি। তবে মোটরসাইকেল উদ্ধার করার কথা বলে মিজানের কাছে টাকা নিয়েছি। আমাকে ধরে এনে মিজানসহ তার লোকজন মারধর করেছে।’
ইসলামপুর থানার ওসি আ স ম আতিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে নবীনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে মিজান। মামলাটির তদন্ত শেষ হয়নি। আমরা উল্টো মামলা দিইনি। নবীনকে ধরে নিয়ে মারধর করেছে মিজানসহ তার লোকজন। মব সৃষ্টির ঘটনায় করা মামলায় মিজানকে আদালতে পাঠালে সংশ্লিষ্ট বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। নবীনকে তার পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে।’