[ad_1]
নবীজি (সা.) সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য রহমতস্বরূপ। তাঁর দয়া ও ভালোবাসা শুধু মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, তা পশুপাখিসহ সব প্রাণীর প্রতি প্রসারিত হয়েছিল। তবে বিড়ালের প্রতি তাঁর ভালোবাসা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। বিড়ালের প্রতি তাঁর এই ভালোবাসা ইসলামে প্রাণীর অধিকারের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
নবীজির অজুর পানিতে বিড়ালের মুখ
নবীজি (সা.) বিড়ালকে গৃহস্থালির অন্তর্ভুক্ত একটি পবিত্র প্রাণী হিসেবে গণ্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিড়াল নাপাক নয়। এটা তোমাদের আশপাশে ঘন ঘন বিচরণকারী। (সুনানে আবু দাউদ: ৫৭)। তাই বিড়ালের মুখ লাগা পাত্র থেকে পানি পান করা বা খাবার গ্রহণ করা জায়েজ। তবে বিড়ালের মাংস খাওয়া হারাম।
সাহাবি হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, একবার রাসুল (সা.) মদিনার একটি স্থানে গিয়ে বললেন, ‘হে আনাস, আমার পাত্রে অজু করার পানি ঢেলে দাও।’ আমি পানি ঢেলে দিলাম। এরপর তিনি প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারতে চলে গেলেন। ফিরে এসে দেখলেন, একটি বিড়াল অজু করার পাত্র থেকে পানি পান করছে। তিনি বিড়ালটির জন্য একটু অপেক্ষা করলেন, যেন সে তৃপ্তিসহকারে পানি পান করতে পারে। নবীজিকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘হে আনাস, বিড়াল হলো গৃহস্থালির অন্তর্ভুক্ত। এটি কোনো কিছু নোংরা বা অপবিত্র করে না।’ (তাবরানি)
বিড়ালের সঙ্গে সাহাবিদের সখ্য
তাবেয়ি দাউদ ইবনুস সালিহ (রহ.) তাঁর মা থেকে বর্ণনা করেন, তাঁর মায়ের মুক্তিদানকারিণী মনিব একবার তাঁকে কিছু ‘হারিসা’ (আরবের বিশেষ খাবার) নিয়ে আয়েশা (রা.)-এর নিকট পাঠান। তিনি বলেন, ‘তখন আমি তাঁকে নামাজরত অবস্থায় পাই। আর তিনি আমাকে ইশারা করে খাবারটি রেখে যেতে বলেন। এ সময় একটি বিড়াল এসে তা থেকে কিছু খেয়ে ফেলে।’ নামাজ শেষে আয়েশা (রা.) বিড়ালের খাওয়া স্থান থেকেই কিছু খাবার খেয়ে বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, বিড়াল নাপাক নয়। তা তোমাদের পাশে অধিক বিচরণকারী একটি জন্তু। আর আমি রাসুল (সা.)-কে তাঁর উচ্ছিষ্ট পানি দিয়ে অজু করতে দেখেছি।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৭৬)
একবার হজরত আবু কাতাদা আনসারি (রা.) তাঁর পুত্রবধূর বাসায় গেলে বিড়াল পাত্র থেকে পানি পান করতে আসে। আবু কাতাদা পাত্রটি কাত করে ধরেন, যেন বিড়ালটি সহজে পানি পান করতে পারে। পুত্রবধূ অবাক হয়ে এ দৃশ্য দেখলে তিনি বলেন, ‘ভাতিজি, অবাক হলে বুঝি?’ তিনি হ্যাঁ সূচক উত্তর দিলে আবু কাতাদা বলেন, ‘রাসুল (সা.) বলেছেন, বিড়াল অপবিত্র নয়; এটি আমাদের চারপাশে বসবাসকারী গৃহস্থালি প্রাণীর একটি।’ (মুয়াত্তা মালিক)
নবীজির সাহাবিদের মধ্যে বিড়ালের প্রতি গভীর মমতার জন্য একজন বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি হলেন হজরত আবু হুরায়রা (রা.)। তাঁর আসল নাম আবদুর রহমান। তিনি বিড়াল ভালোবাসতেন এবং সব সময় তাঁর সঙ্গে একটি বিড়ালছানা রাখতেন। এ কারণেই নবীজি আদর করে তাঁকে ‘আবু হুরায়রা’ বা ‘বিড়ালছানার বাবা’ বলে ডাকতেন।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]