[ad_1]
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্ভবত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া যুদ্ধবিরতির আলটিমেটাম মানবেন না এবং ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল—দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া ও খেরসন—সম্পূর্ণভাবে দখলে নেওয়ার লক্ষ্যে তিনি অটল রয়েছেন। ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের বরাতে আজ মঙ্গলবার এই খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
ট্রাম্প সম্প্রতি তাঁর আলটিমেটামে হুঁশিয়ার করেছিলেন, রাশিয়া যুদ্ধ না থামালে দেশটির ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। শুধু তাই নয়, যারা রুশ তেল কিনছে—বিশেষ করে, চীন ও ভারতের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে।
তবে ক্রেমলিন ঘনিষ্ঠ তিনটি সূত্র বলছে, পুতিন মনে করেন ইউক্রেন যুদ্ধে জয় লাভ করতে যাচ্ছে রাশিয়া। আর অতীতেও রাশিয়ার ওপর বহু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, যুদ্ধের গতিপথে এসব বড় কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, পুতিন ট্রাম্পকে রাগাতে চান না। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনা নষ্ট হোক সেটাও চান না। তবে যুদ্ধ সংক্রান্ত নিজের লক্ষ্যকে তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাখছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর কৌশল হলো—উল্লেখিত চারটি অঞ্চল পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা এবং তারপর শান্তি আলোচনার পথে যাওয়া।
এই বিষয়ে বিশ্লেষক জেমস রজার্স মত দিয়েছেন, যদি পুতিন ওই অঞ্চলগুলো পুরোপুরি দখল করতে পারেন, তাহলে তিনি দাবি করতে পারবেন যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের লক্ষ্য পূর্ণ হয়েছে।
গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা তিনবার সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু আলোচনায় তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। মূলত বন্দী বিনিময় ছাড়া আলোচনায় বাস্তব কোনো অগ্রগতি হয়নি।
রাশিয়া বলছে, তারা স্থায়ী শান্তি চুক্তির ব্যাপারে আন্তরিক। কিন্তু ইউক্রেন যদি তার সৈন্যদের ওই চার অঞ্চল থেকে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার না করে এবং নিরপেক্ষ অবস্থান না নেয়, তাহলে কোনো চুক্তি সম্ভব নয়। ইউক্রেন অবশ্য এই দাবিগুলো সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিকে, ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এই সপ্তাহেই মস্কো সফর করবেন বলে জানা গেছে। এই সফর সম্ভাব্য একটি চুক্তির ইঙ্গিত হতে পারে। তবে সোমবার রাশিয়া ঘোষণা করেছে, তারা আর মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিষেধাজ্ঞা মানবে না। এই বিষয়টি ট্রাম্প ও মস্কোর মধ্যে উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
সূত্রমতে, যুদ্ধ জয়ের বিষয়ে পুতিন অটল থাকলেও তাঁর কিছু অভ্যন্তরীণ উদ্বেগও রয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ক্রমেই খারাপ হচ্ছে। পুতিন এখনো বিশ্বাস করেন, রাশিয়া একদিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে পারবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার অগ্রগতি থাকলেও, বাস্তবিক অর্থে তাদের দখল করা অঞ্চল মাত্র ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার, যা ইউক্রেনের মোট ভূখণ্ডের ১ শতাংশেরও কম। তবুও রুশ সেনাবাহিনী মনে করে, আগামী ২-৩ মাসে ইউক্রেনীয় ফ্রন্ট ভেঙে পড়বে।
ট্রাম্পের হুমকি ভয়ের কারণ হলেও মস্কো বিশ্বাস করে, এসব হুমকির বাস্তবায়ন অনিশ্চিত। রাশিয়া ধারণা করছে, চীন রুশ তেল কেনা বন্ধ করবে না এবং নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বরং আরও বাড়বে।
অতীতের নিষেধাজ্ঞাগুলোর ফলে রুশ অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের তেমন বাধা হয়নি। উত্তর কোরিয়া থেকে গোলাবারুদ ও চীন থেকে যন্ত্রাংশ আমদানির মাধ্যমে রাশিয়া অস্ত্র উৎপাদন বজায় রেখেছে।
ট্রাম্প নিজেও স্বীকার করেছেন, রাশিয়া নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চলার ক্ষেত্রে বেশ দক্ষ। তিনি বলেন, ‘তারা চালাক লোক, তাই দেখা যাক কী হয়।’
গত মার্চেই যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাব দিয়েছিল—যদি রাশিয়া পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়, তাহলে দেশটির ক্রিমিয়া অঞ্চল দখলকে স্বীকার করে নেবে ওয়াশিংটন। শুধু তাই নয়, ২০২২ সালের পর ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া দখলে নিয়েছে, সেগুলোকেও কার্যত রুশ নিয়ন্ত্রণে বলে মেনে নেওয়া হবে। পুতিন ওই প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যান করেছেন। ক্রেমলিনের সূত্রগুলোর ভাষ্য হলো—‘যুদ্ধ থামানো অনেক বেশি কঠিন কাজ, শুরু করার চেয়ে।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]