[ad_1]
সাবেক সেনাপ্রধান এম হারুন-অর-রশীদকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত অনুরোধ ও অন্তিম ইচ্ছা ছিল, যেন তাঁকে সাধারণ মানুষের মতোই দাফন করা হয়। সে অনুযায়ী পরিবারের সিদ্ধান্তে সোমবার (৪ আগস্ট) রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নের হাধুরখীল মাদ্রাসা মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়।
জানা গেছে, মৃত্যুর আগে হারুন-অর-রশীদ মরণোত্তর চক্ষু দান করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছিলেন। তবে নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে যাওয়ায় সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। পরিবারের অনিচ্ছায় তাঁর মরদেহের ময়নাতদন্তও করা হয়নি।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের জন্য আমরা প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাঁর ইচ্ছা ছিল যেন সাধারণভাবে দাফন করা হয়। তাই সে অনুযায়ী দাফন সম্পন্ন হয়েছে।’
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসের একটি কক্ষে সাবেক সেনাপ্রধানের মরদেহ পড়ে থাকার খবর পায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। পরে সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসের শহীদ ক্যাপ্টেন জসিম হলে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন এম হারুন-অর-রশীদ। ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে। ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে উন্নীত হয়ে সেনাপ্রধান নিযুক্ত হন এবং ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
অবসর-পরবর্তী সময়ে তিনি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ফিজিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০০৬ সালে ডেসটিনি মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং কোম্পানিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্ত হওয়ার পর বিতর্কে জড়ান। ২০১২ সালে জালিয়াতি ও অনিয়মের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন তিনি। পরে জামিনে মুক্তি পান। ২০২২ সালের ১২ মে ডেসটিনির অর্থ আত্মসাতের মামলায় আদালত তাঁকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন।
হারুন-অর-রশীদ শেষবারের মতো জীবিত অবস্থায় রোববার রাতে চট্টগ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। পরে চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসের ৩০৮ নম্বর কক্ষে রাত যাপন করেন। পরদিন সকালে আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা থাকলেও ফোনে সাড়া না পেয়ে এবং দরজা না খোলায় সন্দেহ দেখা দেয়। কক্ষের জানালার কাচ ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
মৃত্যুর পর গেস্ট হাউসে যান ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম আদালতে একটি মামলায় তাঁর হাজিরা ছিল। সময় গড়িয়ে যাওয়ার পরও না আসায় ফোন করা হয়, কিন্তু সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে গেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষ গিয়ে দেখে তিনি আর নেই।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]