[ad_1]
খুলনায় গত শুক্রবার রাত থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তিনজন খুন এবং একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, হত্যাকারীরা চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এসব হত্যাকাণ্ডকে টার্গেট কিলিং বলছে পুলিশ। তারা বলছে, এসব পুলিশের একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
শুক্রবার রাতে নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে খুন হন সোনাডাঙ্গা থানাধীন সবুজবাগ এলাকার যুবক মনোয়ার হোসেন টগর। দুর্বৃত্তরা ওই রাতে টগরের বাড়ির দরজায় কড়া নেড়ে সেখানে তাঁর সঙ্গে ৫ মিনিট ধরে কথোপকথনের একপর্যায়ে বুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে।
এ ঘটনায় বাড়ির আশপাশের সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করে আসামিদের শনাক্ত করতে পারলেও তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ ঘটনায় টগরের বাবা জামাল হাওলাদার সাতজন আসামির নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ও সবুজবাগ এলাকার স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, টগর স্থানীয় কয়েকজন সন্ত্রাসী এবং মাদক কারবারির সঙ্গে চলাফেরা করতেন। পরিবারের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ থেকে দূরে থাকার জন্য তাঁকে বারবার বলা সত্ত্বেও তিনি শোনেননি।
সূত্রে জানা যায়, টগরের কাছে ওই সন্ত্রাসীরা টাকা পেত। সেই টাকা পরিশোধের জন্য সন্ত্রাসী একটি গ্রুপ তাঁকে প্রায়ই চাপ দিত। সেই টাকা পরিশোধ না করায় টগরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
সোনাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া দুর্বৃত্তরা তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রাখায় তাদের অবস্থান শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করা সম্ভব হচ্ছে না।
একই রাতের খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর গ্রামে খুন হন ভ্যানচালক আলামিন সিকদার। দিঘলিয়া থানার ওসি এইচ এম শাহীন বলেন, রিপা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী ছিলেন আলামিন। প্রথম স্বামী আসাদুলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ায় তাঁকে বিয়ে করেন। আর এর জেরে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় আলামিনকে। নিহতের ভাই ফারুক সিকদার এ ঘটনায় আসাদুলের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। ওসি জানান, আসাদুলকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে নগরীর ২ নম্বর কাস্টমঘাট এলাকার একটি সেলুনের সামনে অবস্থান নেওয়া যুবক সোহেলকে লক্ষ্য করে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। মোটরসাইকেলযোগে আসা সন্ত্রাসীদের মাথায় হেলমেট এবং মুখ ঢাকা ছিল। সন্ত্রাসীর ছোড়া একটি গুলি সোহেলের পেটে বিদ্ধ হয়। তিনি বর্তমানে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
একই রাতে নগরীর মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার খানাবাড়ির সামনে গলা কেটে হত্যা করা হয় ঘের ব্যবসায়ী আলামিনকে। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্যসচিব বাবুল হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘গত বছর রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হওয়ার পর অনেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী জেল থেকে বেরিয়ে গেছে। লুট হওয়া অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি। তাদের গ্রেপ্তার এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। এ ছাড়া পুলিশের কার্যক্রম যেন দায়সারা।’
সার্বিক বিষয়ে কেএমপি সহকারী পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) খন্দকার হোসেন আহম্মদ বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডগুলো টার্গেট কিলিং, যা পুলিশের একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন সময় খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু বিচার বিভাগের নমনীয়তার কারণে তারা সহজে আদালতের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম চালায়। বিচার বিভাগ কঠোর হলে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ রোধ করা সহজ হতো।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]