[ad_1]
পাহাড়, টিলা আর বনজঙ্গলে আচ্ছাদিত জেলা মৌলভীবাজার। এখানকার সংরক্ষিত বনের গাছ, বাঁশ, বেত উজাড়ের পাশাপাশি জায়গা দখল করে নেওয়া হচ্ছে; যার প্রভাবে কমে আসছে বৃক্ষ আচ্ছাদিত বনের পরিমাণ। সর্বশেষ বন জরিপে এই চিত্র দেখা গেছে।
বন বিভাগ বলছে, ২০১৫ সালের বন জরিপ অনুযায়ী মৌলভীবাজারের মোট আয়তনের ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ বৃক্ষ আচ্ছাদিত বন ছিল; যা ২০২৪ সালের জরিপে কিছুটা কমে এসেছে। তবে উপগ্রহের ছবির মাধ্যমে করা এই জরিপে নতুন সামাজিক বনায়নের চিত্র আসেনি।
জরিপে আরও দেখা গেছে, ২০১৫ সালে সারা দেশে বন আচ্ছাদনের পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং গাছের সংখ্যা ছিল ১৬৯ কোটি। ২০২৪ সালের জরিপে আচ্ছাদন হ্রাস পেয়ে ১২ দশমিক ১১ শতাংশ হয়। একই সঙ্গে গাছের সংখ্যা ১৫৭ কোটিতে নেমে এসেছে। জায়গার হিসাবে ১ লাখ হেক্টর বনভূমি হ্রাস পেয়েছে।
মৌলভীবাজারে বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, আদমপুর বন, লাঠিটিলা, পাথারিয়াসহ বেশ কিছু সংরক্ষিত বনাঞ্চল রয়েছে; যার আয়তন ৫৩ হাজার ১০৯ একর। এখন সময় যত যাচ্ছে, ততই এসব বনভূমি কমে আসছে। বন বিভাগের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে বনের বেদখল জমি উদ্ধার করা হলেও তা তেমন স্থায়ী হচ্ছে না।
এ ছাড়া সংরক্ষিত বনে একাধিকবার আগুন লেগেছে। পাথারিয়া পাহাড় বনের সমনভাগ বিটে পুড়েছে ৪০ হেক্টর জায়গা। এ ছাড়া কয়েক দফা লাউয়াছড়া ও বর্ষিজোড়ায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। এসব ঘটনায় বন ও বন্য প্রাণীর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।
পরিবেশবিদেরা বলছেন, বন কমার পেছনে জনসংখ্যা বৃদ্ধি একটি প্রধান কারণ। বনের পাশে বাস করা নিম্ন আয়ের মানুষ গাছ কেটে কাঠ বিক্রি, জ্বালানি তৈরি করেন। এ ছাড়া একশ্রেণির অসাধু ব্যক্তি গাছমহালের নাম করে যুগ যুগ ধরে বনের গাছ চুরি করে বিত্তবান হয়েছেন। তাঁরাই আবার বনের জায়গা দখল করেছেন। তাঁদের সহযোগিতা করেছেন সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা।
পরিবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা সংবাদকর্মী নূরুল মোহাইমিন মিল্টন বলেন, ‘আমাদের দেশে গাছ কাটার ওপর কোনো বিধিনিষেধ নেই। আর থাকলেও কেউ তা মেনে চলে না। যে যার মতো করে সামাজিক বনায়নের গাছ চুরি করছে। সংরক্ষিত বনের বিশাল আকৃতির গাছগুলো পাচার করা হয়েছে। বনের চেয়ে গ্রামে গাছের সংখ্যা এখন বেশি। অনেক প্রজাতির গাছ হারিয়ে গেছে। এ জন্য যত সময় যাবে বৃক্ষ আচ্ছাদিত জায়গা কমে আসবে। আর এটা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনবে। সঞ্চিত কার্বন ঠিকঠাক রাখতে হলে বৃক্ষনিধন, লতাপাতা উজাড় করা বন্ধ করতে হবে।’
এ বিষয়ে কথা হলে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির আজকের পত্রিকাকে জানান, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে মৌলভীবাজারে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকা দশমিক কয়েক পয়েন্ট কমেছে। তিনি বলেন, ‘বন বিভাগের পক্ষ থেকে গত ৪-৫ বছরে নতুন করে যেসব সামাজিক বনায়ন করা হয়েছে, সেগুলো জরিপের স্যাটেলাইট ছবিতে আসেনি। আগামী জরিপে এই অঞ্চলে বৃক্ষ আচ্ছাদিত জায়গা বৃদ্ধি পাবে। যারা বনের জায়গা দখল করেছে, আমরা তাদের কাছ থেকে জমি পুনরুদ্ধার করছি। একই সঙ্গে যারা গাছ চুরি করে, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]