[ad_1]
ফ্লোরিডার লডারহিলে গতকাল জেসন হোল্ডারের শেষ বলের বাউন্ডারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টানা ৯ হারের পর জয়ের দেখা পেয়েছিল। তাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আশা তৈরি হয়েছিল উইন্ডিজের। সেই জয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের যখন মাঠে নামল উইন্ডিজ, এবার তারা মাঠ ছাড়ল হারের হতাশা নিয়েই।
পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের তিনটি টি-টোয়েন্টিই হয়েছে ফ্লোরিডার লডারহিলে। এই মাঠে গতকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পেয়েছিল উইন্ডিজ। ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই আজ সিরিজ নির্ধারণী টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেছে পাকিস্তান-উইন্ডিজ। এবার ১৩ রানে জিতে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ নিজেদের করে নিল সালমান আলী আঘার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান।
১৯০ রানের লক্ষ্যে নেমে দুর্দান্ত শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৬ বলে ৪৪ রানের জুটি গড়তে অবদান রাখেন দুই ওপেনার জুয়েল অ্যান্ড্রু ও অ্যালিক অ্যাথানাজ। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইন্ডিজ উইকেটরক্ষক অ্যান্ড্রুকে (২৪) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন হারিস রউফ। বিধ্বংসী ব্যাটিং করতে থাকা অ্যান্ড্রু এবার রউফকে তুলে মারতে যান। টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়া বল এরপর লং অনে তালুবন্দী করেছেন হাসান আলী।
উদ্বোধনী জুটিতে ৪৪ রানই আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের সর্বোচ্চ জুটি। প্রথম উইকেট পড়ার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে উইন্ডিজ। এক পর্যায়ে শেষ ৫ বলে ২৪ রানের সমীকরণ এসে পড়ে ক্যারিবীয়দের সামনে। হাতে রয়েছে ৫ উইকেট। শেষ বলে ২৪ রানের সমীকরণ মেলাতে তখন বড় শট খেলার কোনো বিকল্প ছিল না শারফেন রাদারফোর্ডের সামনে। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে হাসানকে তুলে মারলেও রাদারফোর্ড ঠিকমতো সংযোগ করতে পারেননি। ডিপ মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা সাহিবজাদা ফারহানের তালুবন্দী হয়েছেন রাদারফোর্ড।
রাদারফোর্ড আউট হয়েছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির পর। ৩৫ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৫১ রান করেছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৬ রানে থেমে যায়। ইনিংস সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন অ্যাথানাজ। ৪০ বলের ইনিংসে ৮ চার ও ১ ছক্কা মেরেছেন। পাকিস্তানের হাসান, রউফ, সাইম আইয়ুব, মোহাম্মদ নাওয়াজ, সুফিয়ান মুকিম—প্রত্যেকেই একটি করে উইকেট নিয়েছেন। এখানে উইন্ডিজ ব্যাটার রস্টন চেজ হয়েছেন রিটায়ার্ড আউট।
৭ উইকেটে । হাতে ৩ উইকেট নিয়ে শেষ সমীকরণও তখন স্বাগতিকদের সামনে মনে হচ্ছিল পাহাড় সমান। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে অভ্যস্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেজের দিকের ব্যাটাররা যতই ঝড় তুলতে পারুন না কেন, বাজে ফর্মের চক্রে থাকা দলটির জন্য জয় অনেক দূরের পথই।
ম্যাচ জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ দুই ওভারে ২৪ রানের সমীকরণের সামনে এসে পড়ে। স্বাগতিকদের হাতে তখন ৩ উইকেট। ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে আসা হাসান আলীর ওভার থেকে ক্যারিবীয়রা নেয় ১৬ রান। এই ওভারে একটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন রোমারিও শেফার্ড। ম্যাচ জয়ের খুব কাছাকাছি যখন এসে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, তখন শেফার্ডকে (১৫) এলবিডব্লিউ করে ধাক্কা দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। অষ্টম উইকেটে শেফার্ড-হোল্ডার গড়েন ১৬ বলে ২৯ রানের জুটি।
শেফার্ডের উইকেট হারানোর পর ম্যাচ আবার হেলে পড়ে পাকিস্তানের দিকে। শেষ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এসে পড়ে ৩ রানের সমীকরণের সামনে। তখনই শাহিনকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে চার মেরে উইন্ডিজকে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দেন হোল্ডার। ম্যাচ শেষে হোল্ডারকে পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন চেজ। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছেন হোল্ডার। ১০ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। বোলিংয়ে ৪ উইকেটের পাশাপাশি ধরেছেন দুটি ক্যাচ।
সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান। উদ্বোধনী জুটিতে ৯৮ বলে ১৩৮ রান যোগ করেন ফারহান ও সাইম আইয়ুব। এই জুটি ভাঙার পর আর সেভাবে রান ওঠেনি পাকিস্তানের ইনিংসে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৭৯ রান করে সফরকারীরা। ইনিংস সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেন ফারহান। ৫৩ বলের ইনিংসে তিনটি চার ও পাঁচটি ছক্কা মারেন তিনি। সাইম করেছেন ৬৬ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হোল্ডার, চেজ ও শামার জোসেফ নিয়েছেন একটি করে উইকেট। পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক ব্যাটার মোহাম্মদ হারিস হয়েছেন রানআউট।
৫৩ বলে ৭৪ রান করে ফারহান হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। সিরিজসেরার পুরস্কার পেয়েছেন নাওয়াজ। সিরিজে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানি বাঁহাতি স্পিনার বোলিং করেছেন ৬.৩৬ ইকোনমিতে। ৮ আগস্ট ত্রিনিদাদে শুরু হবে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে। ১০ ও ১২ আগস্ট একই মাঠে হবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়ানডে।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]