[ad_1]
একসময় কুঁড়েঘর ছিল চড়ুই পাখির রাজ্য। মানুষের ঘরের বাঁশের কড়িকাঠে ঝুলে থাকত তাদের ছোট্ট বাসা। ঝুপ করে একটা পাখি উড়ে যেত নীড় থেকে উঠোনে, আবার ফিরে আসত ঠোঁটে করে খড়কুটো নিয়ে। এখন সে কুঁড়েঘর নেই, শহর ছুঁয়েছে পিচঢালা পথ আর কংক্রিটের দেয়াল। তবুও হার মানেনি চড়ুই। ফিরে এসেছে, নতুন করে গড়ে নিয়েছে আপন ঠিকানা। এবার শহরের ভেতরেই।
ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা—এ যেন এখন চড়ুইদের গহিন গ্রাম। কৃষ্ণচূড়া, বকুল, আম আর দেবদারু গাছে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার চড়ুই পাখির অভয়াশ্রম। বিকেল হলেই ডালে ডালে ভিড় করে তারা। চঞ্চলতা আর কিচিরমিচির শব্দে মুখর হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
গোধূলি লগনে পাখিদের ফিরে আসা শুরু হয়। পথচারীরা থেমে দাঁড়ান, কেউ মোবাইলে ভিডিও করেন, কেউ কেবল নীরবে তাকিয়ে থাকেন। ছোট্ট গাছগুলো যেন আশ্রয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে তাদের কাছে। পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের মোড়ের পাশে ছোট্ট একটি আমগাছে হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে দেওয়া যায় পাখির দলকে। কিন্তু নিয়ম আছে—ধরাধরি নিষেধ। ভুল করে কেউ ধরলেও শুনতে হয় গালমন্দ। কারণ, দুই দশক ধরে এখানেই গড়ে উঠেছে তাদের বসতি।
ফল ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া রোজের মতো বসে থাকেন সুরুচি রেস্টুরেন্টের সামনে। বলেন,‘সন্ধ্যার দিকে যখন পাখিগুলো ফিরে আসে, তখন মনটাই ভালো হয়ে যায়। গাছে গাছে যেন একটা উত্সব শুরু হয়।’
শুধু সবুজ মিয়া নন, আশপাশের দোকানি থেকে শুরু করে পথচারী, সবাই যেন নিজ নিজ জায়গা থেকে পাহারাদারের ভূমিকায়। কেউ যেন পাখিদের বিরক্ত না করে, এ নিয়ে সবসময় সতর্ক থাকে। শুরুটা ছিল ৪০০-৫০০ পাখি দিয়ে, এখন সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫-৬ হাজারে।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাদিকুল ইসলাম দাঁড়িয়ে ছিলেন কৃষ্ণচূড়ার নিচে। বললেন, ‘আগে গ্রামে কুঁড়েঘরে দেখা যেত চড়ুই পাখি, এখন তো সে কুঁড়েঘরই নেই। এখানে এসে পাখিগুলো দেখে খুব ভালো লাগছে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইজহার আহমেদ খান বলেন, ‘চড়ুই পাখি দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে। শহরের এই গাছগুলোতে তাদের বসতি হওয়া সত্যিই প্রশংসনীয়। এদের সংরক্ষণ করা আমাদের দায়িত্ব।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]