[ad_1]
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে এক প্রার্থীর জন্য সুপারিশ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমান। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে তাঁর সুপারিশ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
আজমীরা আরেফিন নামের এক প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন লতিফুর রহমান। আজমীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক পদের প্রার্থী। তিনি সাক্ষাৎকারের জন্য ডাক পেয়েছেন। আগামীকাল সোমবার (৪ জুলাই) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দপ্তরে এই প্রার্থীর সাক্ষাৎকার গ্রহণের কথা রয়েছে।
এরই মধ্যে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে আজমীরা আরেফিনের প্রবেশপত্রের ছবি স্টোরি হিসেবে প্রকাশ পেয়েছে। এই প্রবেশপত্রের ওপর রেফারেন্স হিসেবে ইংরেজিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমানের নাম লেখা আছে। এই প্রবেশপত্র ফেসবুক স্টোরিতে ফাঁস হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান।
রাতেই ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি বলেছেন, ‘আমার ফেসবুক স্টোরিতে একজন আবেদনকারীর প্রবেশপত্র কীভাবে আপলোড হয়েছে বুঝতে পারিনি। তবে মোবাইল ফোনটি নিয়ে আমার ছেলে বেশ কিছু সময় গেম খেলছিল। তখন হয়তো ভুলবশত স্টোরিতে এসে গেছে।’
উপ-উপাচার্য আরও লেখেন, ‘প্রতিদিনই কোনো না কোনো আবেদনকারী বা তাঁদের পক্ষে বিভিন্ন সূত্রে সাক্ষাৎ করতে এসে সিভি-প্রবেশপত্র দিয়ে যায়, আবার অনেকে ফোন করে আবেদনকারীর প্রবেশপত্র হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড করে, কেউ টেক্সট করে সুপারিশ পাঠায়।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘রুয়ার নির্বাচনের সময় একজন অ্যালামনাস, যিনি সাবেক এমপি ছিলেন, উনার সঙ্গে পরিচয় হয়। কয়েক দিন আগে উনি ফোন করে উনার এলাকার একজন আবেদনকারীর কথা বলেন এবং তাঁর প্রবেশপত্র সেন্ড করেন। পরিচিত অনেকেই এ রকম সুপারিশ করেন। তাঁদের মধ্যে ছাত্র, শিক্ষক, বন্ধু, সহকর্মী, রাজনীতিক অনেকেই আছেন। এই মুহূর্তে আমার অফিসে এবং মোবাইল ফোনে ডজন খানেক এ রকম সুপারিশ আছে। তবে এগুলো কোনোভাবেই লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে না। আশা করি, বিষয়টি নিয়ে কেউ ভুল বুঝবেন না। ভুলবশত এই স্টোরির জন্য দুঃখপ্রকাশ করছি।’
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) নির্বাচন বিএনপিপন্থীরা বর্জন করেন। এতে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ, সংরক্ষিত নারী সদস্যসহ মোট ২৭টি পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা জামায়াতপন্থী হিসেবে পরিচিত। এখন আবার রাকসু নির্বাচন নিয়ে দুই মেরুতে রয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির। ঠিক এই মুহূর্তে শিক্ষক নিয়োগে জামায়াত নেতার সুপারিশ ফাঁস হওয়ার বিষয়টিকে রাজনৈতিকভাবেই দেখছেন অনেকে। এ নিয়ে তাঁরা ফরিদ উদ্দিন খানের স্ট্যাটাসে কমেন্টও করছেন।
লিখন আহমেদ নামের একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘এটা ভুল নয়। এটা পরিকল্পিত এজেন্ডার একটা অংশ! ডজন খানিক রেফারেন্স এর মধ্যে এই রেফারেন্সই কেন ভুলে শেয়ার হলো স্যার? এখান থেকে ইস্যু ক্রিয়েট হবে। ছাত্রদল জল ঘোলা করবে। মিছিল, মিটিং হবে। সামনে রাকসু, এগুলো নিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে। সব মিলিয়ে দারুণ প্ল্যান।’ কেউ কেউ আবার বাচ্চাদের ফোন না দেওয়ার ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘তা না হলে কখন কি ফেসবুকে চলে আসে কে জানে!’ তারা এমন সুপারিশের সমালোচনা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আজ রোববার সকালে সাবেক সংসদ সদস্য লতিফুর রহমানকে ফোন কল করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় দিলে তিনি অন্য আরেকটি কলে কথা বলছেন বলে জানান। তিনি কিছুক্ষণ পরে কল করতে বলেন। পরবর্তীতে আবার ফোন কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]