[ad_1]
কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী গ্রামের জাফর আলমের মেয়ে আসমাউল হোসনা অটোরিকশায় করে পাশের ঈদগাঁও উপজেলার কালিরছড়ায় শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিল দুই নাতি ও তাঁর আরেক মেয়ে। পথিমধ্যে রামু উপজেলার রশিদ নগরের ধলিরছড়া রেলক্রসিং পার হতেই তাঁদের বহন করা অটোরিকশাটি চট্টগ্রামমুখী কক্সবাজার এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনে ধাক্কা লেগে আটকে যায়। ট্রেনটি অটোচালক ও চার যাত্রীকে টেনে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়।
শনিবার বেলা দেড়টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেলপথের রামু উপজেলার ধলিরছড়া রেলক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে একই পরিবারের দুই নারী ও দুই শিশু এবং চালক নিহত হন।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার ভারুয়াখালীর জাফর আলমের মেয়ে আসমাউল হোসনা (২৭), তাঁর বোন রেনু আক্তার (৩২), আসমাউলের দুই শিশু সন্তান আতা উল্লাহ (১৩ মাস) ও আশেক উল্লাহ (৩) ও অটোরিকশাচালক হাবিবুর রহমান (৪০)।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈয়বুর রহমান বলেন, নিহত পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত আসমাউল হোসনা ও রেনু আক্তারের বাবা জাফর আলম জানান, তাঁর দুই মেয়ে ও দুই নাতি দুপুরে অটোরিকশায় করে আসমাউলের শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁদের অটোরিকশাটি ধলিরছড়া রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় হঠাৎ চট্টগ্রামমুখী একটি ট্রেনের সামনে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হন।
প্রত্যক্ষদর্শী মোহাম্মদ আবদুল্লাহ ও সালাহউদ্দিন জানান, ট্রেনটি প্রায় এক কিলোমিটার পথ অটোরিকশাকে টেনে নিয়ে যায়। এতে নিহতদের শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। শরীরের একেকটি অংশ একেক জায়গায় ছিটকে পড়ে।
ক্ষুব্ধ জনতার রেলপথ অবরোধ
ট্রেনটির সামনের ইঞ্জিনে আটকে থাকা অটোরিকশার এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রেলপথ সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা চট্টগ্রামমুখী সৈকত এক্সপ্রেস প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে সেনাবাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে রেলপথ থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এ দুর্ঘটনা রেলের অবহেলার কারণে হয়েছে।
স্থানীয় রশিদনগর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মাসুম বলেন, প্রায় ২০ মাস আগে কক্সবাজার-দোহাজারী রেলপথ চালু হয়েছে। কিন্তু ধলিরছড়া রেলক্রসিংসহ আশপাশের লেভেল ক্রসিংয়ে কোনো গার্ড বা সংকেত দেওয়ার কেউ নেই। এতে প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে।
কক্সবাজারের পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী জানান, এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস পেয়ে স্থানীয় জনতা অবরোধ প্রত্যাহার করেছে।
দুর্ঘটনা তদন্তে রেলওয়ের কমিটি গঠন
দুর্ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। তিনি জানান, তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানকে। কমিটিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, অটোরিকশাটি রেললাইনে উঠে চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এরপর অটোরিকশাটি ট্রেনের ইঞ্জিনে আটকে যায়। ট্রেনটি অটোরিকশাকে টেনে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নিয়ে যায়।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]