[ad_1]
যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার আলাদিপুর এলাকা থেকে নেমে আসা পানির ঢলে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এতে শিরাশুনি গ্রামসহ আশপাশের এলাকার প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট, বেড়েছে পানিবাহিত রোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি। কর্মহীন হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।
আজ শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, উজানের কেশবপুর এলাকার পানি প্রবাহিত হয়ে তালার তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শিরাশুনি গ্রামে প্রবেশ করছে। গ্রামের অধিকাংশ বসতবাড়ি জলমগ্ন। রাস্তাঘাট, কৃষিজমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সবই পানির নিচে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে হঠাৎ পানি ঢুকতে শুরু করে।
শিরাশুনি গ্রামের গুলশানা আরা খাতুন বলেন, ‘অতি বৃষ্টির সঙ্গে উজানের পানি মিলিয়ে হঠাৎ করেই আমাদের গ্রাম ডুবে গেছে। রান্নাবান্না, কৃষিকাজ, শিশুদের স্কুলে যাওয়া সবকিছুতেই কষ্ট হচ্ছে।’
একই গ্রামের মজিবর রহমান শেখ বলেন, ‘গত তিন বছর ধরে এই পানি আমাদের স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস করে দিয়েছে। সাংবাদিক ও এনজিওরা আসেন, কথা বলেন, কিন্তু সমাধান কিছুই হয় না। কৃষিকাজ বন্ধ, কাজ নেই, ঘর থেকেও বের হতে পারি না।’
স্থানীয় নারী ময়না বেগম বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে কোমরসমান পানি। কেউ মারা গেলে কবরস্থানে নেওয়াও সম্ভব হবে না। বিশুদ্ধ পানির অভাবে অনেকেই চুলকানি ও অন্যান্য পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।’
তালা উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান জানান, গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনের পরিকল্পনা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। কেশবপুরের নরনিয়া খাল দিয়ে পানি না ছাড়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এম আবুল কালাম আজাদ জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইতিমধ্যে এলাকা পরিদর্শন করেছেন। পানির গতি বাড়াতে বিভিন্ন খালের মুখে থাকা নেটপাটা ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। তবে কেশবপুরের পানি না সরলে আশপাশের আরও ১০টি গ্রাম স্থায়ী জলাবদ্ধতায় পড়বে।
তিনি বলেন, ‘নোয়াপাড়া খাল দিয়ে কিছুটা পানি সরানো গেলেও নরনিয়া খাল ও ভদ্রা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বড় বাধা সৃষ্টি হয়েছে। কেশবপুর ও মনিরামপুরের পানি ভদ্রায় না পড়ে আমাদের এলাকায় পড়ে জলাবদ্ধতার কারণ হচ্ছে। ভদ্রা নদী খনন করলেই স্থায়ী সমাধান সম্ভব।’
ইউএনও দীপা রাণী সরকার বলেন, ‘উপজেলার অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। ইতিমধ্যে কয়েকটি খালের প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়েছে। আমি নিজেও একাধিকবার এলাকা পরিদর্শন করেছি। আজ বিকেলেও শিরাশুনি এলাকায় গিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছি। দ্রুত পানি অপসারণে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]