ইংল্যান্ড-ভারতের চতুর্থ টেস্টের শেষ দিনে ওল্ড ট্রাফোর্ডে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে ল্যাঙ্কাশায়ার ক্লাব। পাকিস্তানের জার্সি পরে খেলা দেখতে আসা এক দর্শককে মাঠ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে পাকিস্তানের জার্সি ঢাকতে বলেন, তিনি এতে অস্বীকৃতি জানান। ল্যাঙ্কাশায়ারের হোমগ্রাউন্ড হলো ওল্ড ট্রাফোর্ড।

ফারুক নাজার নামের সেই সমর্থক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন, যেখানে দেখা যায় একজন নিরাপত্তাকর্মী তাঁকে পাকিস্তানের সবুজ ওয়ানডে জার্সি ঢেকে রাখতে অনুরোধ করছেন। নিরাপত্তাকর্মী জানান, তাঁকে ‘কন্ট্রোল রুম’ থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নাজার সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। তারপর তাকে পুলিশের সহায়তায় মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয় তাঁকে। ল্যাঙ্কাশায়ারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তাকর্মীদের প্রতি অগ্রহণযোগ্য আচরণের’ কারণে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়।

ঘটনাটি ঘটে টেস্টের শেষ দিনে। তারপর ক্লাবটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত চালায়। জানিয়েছে, তারা যেকোনো ধরনের অস্বস্তি বা অপমানের জন্য দুঃখিত, যা ইচ্ছাকৃত ছিল না এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি মোকাবিলার নীতিমালা পর্যালোচনা করবে।

ল্যাঙ্কাশায়ার জানায়, আগের দিন (চতুর্থ দিন) ভারত ও পাকিস্তানের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনাকর একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে শেষ দিন নিরাপত্তাব্যবস্থায় আরও সতর্কতা জারি হয়। তারা বলেছে, ‘আমরা স্পষ্ট করতে চাই, শুধুমাত্র পাকিস্তানের জার্সি পরার কারণেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়নি। আগের দিন একটি ঘটনায় কিছু সমর্থক পাকিস্তানের জাতীয় পতাকা নাড়ান, যা কাছাকাছি থাকা ভারতীয় সমর্থকদের সঙ্গে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। তখন আমাদের স্টুয়ার্ডরা পরিস্থিতি শান্ত করতে সক্ষম হন, যখন পতাকা সরিয়ে নিতে বলা হলে তারা তা বিনা আপত্তিতে করেন।’

ক্লাবটি আরও জানায়, ‘এই প্রেক্ষাপটেই শেষ দিন আমাদের দল নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আগাতে বাধ্য হয়। স্ট্যান্ড সুপারভাইজার ব্যক্তিটির নিজের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং উত্তেজনা এড়াতে জার্সিটি ঢেকে রাখতে বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করেন। কিন্তু বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও তিনি তা মানতে অস্বীকৃতি জানান।’

ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক সম্পর্ক বেশ তলানিতে, বিশেষ করে গত মে মাসে সীমান্তে সামরিক উত্তেজনার পর। এর প্রভাব দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই ও পিসিবির সম্পর্কেও পড়েছে। ২০১২-১৩ সালের পর থেকে তারা দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি এবং ২০০৭-০৮ সালের পর থেকে কোনো টেস্টও খেলেনি। এমনকি আইসিসি টুর্নামেন্টেও নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।

এই সপ্তাহেই বার্মিংহামে একটি লেজেন্ডস টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। এর মধ্যে একটি ছিল সেমিফাইনাল—তারা ম্যাচটি ছেড়ে দেয়।