[ad_1]
বিস্তৃত মাঠজুড়ে ইটের স্তূপ। কোথাও কাদাপানিতে ভরা গর্ত; আবার কোথাও পোঁতা বাঁশের খুঁটি। দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি স্টেডিয়াম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছয় দশকের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী স্টেডিয়াম ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। দেড় মাসব্যাপী মেলার আয়োজন শেষে মাঠ খুঁড়ে রেখে এভাবেই ফেলে গেছে আয়োজকেরা। মেলার অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রী সরানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে তিন মাস ধরে অনুশীলন ও খেলাধুলা বন্ধ আছে স্টেডিয়ামটিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা শহরের পুরোনো স্টেডিয়ামে গত ১০ মে এক মাসব্যাপী মেলার উদ্বোধন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। মাসব্যাপী মেলা চলার কথা থাকলেও প্রায় দেড় মাস পর গত ২২ জুলাই মেলা শেষ হয়। আয়োজক কমিটির সঙ্গে কথা ছিল, মেলা শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে মাঠ পরিষ্কার করে খেলার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। কিন্তু মেলা শেষ হওয়ার পাঁচ সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত খেলার মাঠে ইটপাটকেল ও বাঁশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এতে করে ক্ষুব্ধ খেলোয়াড়, কোচ ও সচেতন মহল। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহসভাপতি ও মেলা কমিটির আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আবহাওয়া ভালো হলে এক সপ্তাহের মধ্যে মাঠ পরিষ্কার করা হবে।
গত বুধবার বিকেলে মাঠে গিয়ে ইট ও বাঁশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। আবার বিভিন্ন জায়গায় খানাখন্দে জমে আছে পানি। সেখানে অনুশীলনে আসা তাহমীদ ফয়সাল নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিন মাসের বেশি সময় তাঁরা এ মাঠে খেলতে পারছেন না। জেলা শহরের বাইরে বারঘরিয়া এলাকার ডা. আ আ ম মেসবাহুল হক বাচ্চু স্টেডিয়ামে খেলতে যাচ্ছেন।
শিক্ষার্থী তাহমীদ বলেন, ‘ক্রিকেট খেলার জন্য পুরোনো স্টেডিয়াম উপযুক্ত ছিল। কিন্তু মেলার কারণে চার মাস এখানে খেলতে পারছি না। বারঘরিয়া এলাকার ওই স্টেডিয়ামে খেলার জন্য যাচ্ছি। তবে ওই স্টেডিয়ামটি কিছুটা দূরে হওয়ার কারণে অনেকেই খেলতে যাচ্ছে না। আগে যারা অনুশীলন করত, এখন তাদের অনেকেই আসছে না।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনুশীলনে আসা এক খেলোয়াড় বলেন, ‘এক মাসের সময় নিয়ে মেলার আয়োজন করে দেড় মাস করল। মেলা শেষ হওয়ার এক মাস পার হয়ে যাচ্ছে। তবুও ইট-বাঁশ সরাচ্ছে না। মাঠটি দেখে মনে হচ্ছে পরিত্যক্ত ইটভাটা।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্রীড়া সংস্থার আজীবন সদস্য তৌফিকুল ইসলাম তোফা একপ্রকার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কিছু চাটুকার লোকের কারণে খেলার অঙ্গনটা এখন ধ্বংসের পথে। খেলাধুলা না হলে সমাজে অপরাধের প্রবণতা বাড়বে।
জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব মনিরুজ্জামান মনির বলেন, ‘মেলা করার মতো চাঁপাইনবাবগঞ্জে বহু ফাঁকা জায়গা আছে। সেখানে গিয়ে করলে চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর জন্য ভালো হতো।’
মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘মেলা শেষ হওয়ার ১০-১৫ দিনের মধ্যে যেখানে মাঠ পরিষ্কার হওয়ার কথা ছিল, সেখানে এত দিন চলে গেলেও আজ অবধি মাঠটি পরিষ্কার করা হয়নি। মাঠটি দ্রুত পরিষ্কার করে তরুণদের খেলাধুলার উপযোগী করা হোক—এটাই আমাদের দাবি।’
কথা হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহসভাপতি এবং শিল্প ও বাণিজ্য মেলা কমিটির আহ্বায়ক খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে ইটগুলো ভেজা থাকায় সরানো যাচ্ছে না। আবহাওয়া ভালো হলে এক সপ্তাহ সময় লাগবে মাঠটি পরিষ্কার করতে।’
এ বিষয়ে জানতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক আব্দুস সামাদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]