[ad_1]
এশিয়া কাপের সূচি প্রকাশের পর পাঁচ দিন পেরিয়ে গেছে। এবারের এশিয়া কাপেও ভারত-পাকিস্তানকে রাখা হয়েছে একই গ্রুপে। রাজনৈতিক বৈরিতায় আইসিসি ইভেন্ট, এশিয়া কাপ ছাড়া যেহেতু মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ নেই, তাই মেজর টুর্নামেন্টে একই গ্রুপে রাখা।
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সূচি ঘোষণার পর থেকেই চলছে ‘যুদ্ধ’। এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বয়কটের কথা বলছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। এখানেও সেই দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতা। বিশেষ করে, এ বছরের এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের গুলিতে পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক আরও বেশি উত্তপ্ত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংঘাত থেমে যুদ্ধবিরতির পরও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের প্রসঙ্গে এলে চলে আসে পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিতে ‘দ্য লাস্ট ওয়ার্ড’ নামে এক অনুষ্ঠানে পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েছেন মদন লাল। ভারতের ১৯৮৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার বলেন, ‘যারা প্রিয়জন হারিয়েছেন, জিজ্ঞেস করুন তাদের মনে এখন কী চলছে। তাদের জীবন নিয়ে তারা শঙ্কিত। আমাদের সাধারণ মানুষের অভ্যাস যে এমন ঘটনা দ্রুত ভুলে যাই। যখন ক্রিকেট ম্যাচের প্রসঙ্গ আসে, আর্থিক ব্যাপার চলে আসে, আইসিসি টুর্নামেন্ট চলে আসে, তখন আর কিছু মনে থাকে না। এখানেও তেমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে। তবে যদি আপনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাই না।’
পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের পরপরই অনেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ক্রিকেটীয় সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি তুলেছিলেন। এ কারণে এশিয়া কাপের সূচি ঘোষণায় অনেক দেরি হয়েছে। সূচিতে যখন একই গ্রুপে রাখা হয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে, তখন তিন মাস আগের পুরোনো ঘটনা টেনে আনা হচ্ছে। পুরোপুরি দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্ক কেন ছিন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের উত্তরে মদন লাল বলেন, ‘আপনি চাইলে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা (ভারত) খেলব না। এটা আমাদের দেশে পুরোনো অভ্যাস। ১০ থেকে ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেই আমরা সেই ঘটনা ভুলে যাই। এসব ক্ষেত্রে (পাকিস্তানের বিপক্ষে না খেলা) সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে বিসিসিআই ও সরকার। সাধারণ জনগণ না। যদি সাধারণ জনগণের সিদ্ধান্ত জানতে চান, তারা কখনোই পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে চাইবে না।’
শ্রীশান্ত ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ বাতিল তো বটেই, পাকিস্তানকে এশিয়া কাপ থেকে বাদ দিতে বলছেন। ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আজহারউদ্দীনের মতে, দ্বিপক্ষীয় সিরিজ যদি না হয়, তাহলে এশিয়া কাপ, আইসিসি ইভেন্টে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ রাখার কোনো দরকার নেই। ভারত-পাকিস্তান সবশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৩ সালে। শ্রীশান্ত-আজহারউদ্দীন-মদন লালরা যখন দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ আয়োজনের বিপক্ষে, তখন ভিন্ন মত প্রকাশ করলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। সৌরভের মতে দুই দলের মধ্যে খেলা অবশ্যই হওয়া উচিত।
পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কী হবে, সেটার ব্যাপারে বল বিসিসিআইয়ের কোর্টে ঠেলে দিয়েছে ভারতের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ভারতের বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র বলেছেন, ‘এখন পর্যন্ত ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পরিধির মধ্যে আসেনি বিসিসিআই। যেখানে জাতীয় ক্রীড়া পরিচালনা বিল এখনো পাস হয়নি। তাই মন্ত্রণালয় এখানে কিছু বলতে পারবে না। তবে আমরা অপেক্ষা করে দেখব বিসিসিআই এই ব্যাপারে কী উত্তর দেয়।’
কাগজে-কলমে ২০২৫ এশিয়া কাপের আয়োজক ভারত। কিন্তু বিসিসিআই চাইলেও এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বয়কট করতে পারবে না বলে কদিন আগে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে জানা গেছে। কারণ, এশিয়া কাপের মতো বহুজাতিক টুর্নামেন্টে ভারত না খেললে পাকিস্তান ওয়াকওভার পেয়ে ম্যাচ জিতে যাবে। এটার জলজ্যান্ত উদাহরণ ইংল্যান্ডে চলমান ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডসের (ডব্লিউসিএল) ভারত-পাকিস্তান সেমিফাইনাল। ভারত এই ম্যাচ বয়কট করায় পাকিস্তান উঠে গেছে ফাইনালে।
এবার এশিয়া কাপের ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশ পড়েছে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকংয়ের বিপক্ষে। আর ‘এ’ গ্রুপে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান। ভেন্যু ও ম্যাচ শুরুর সময় এখনো চূড়ান্ত না হলেও ম্যাচের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গেছে। সূচি অনুযায়ী ১৪ মে মুখোমুখি হবে ভারত-পাকিস্তান। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর গ্রুপে আমিরাত-ওমানকে রাখার কারণ যে ভারত-পাকিস্তান বারবার মুখোমুখি হওয়া, সেটা না বললেও চলছে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে স্টেডিয়ামের গ্যালারি দর্শকে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এ ছাড়া এই ম্যাচ ঘিরে পৃষ্ঠপোষক, আয়োজকেরা কোটি কোটি টাকা লাভ করে থাকেন।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]