[ad_1]
ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার মতো দুর্যোগে বা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হলেও সচল থাকে অ্যামেচার রেডিও। যা হ্যাম রেডিও নামে পরিচিত। এই রেডিও স্বতন্ত্র ফ্রিকোয়েন্সিতে সচল থাকায় সংকটকালে জরুরি তথ্য আদান-প্রদান, উদ্ধার তৎপরতা সমন্বয় এবং প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হয়।
গতকাল বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) কার্যালয়ে ‘বন্যা, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন অ্যামেচার/হ্যাম রেডিও-এর ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ সব কথা জানান।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইকবাল আহমেদ বলেন, ফেনীর বন্যা পরিস্থিতিতে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এলাকায় অ্যামেচার রেডিও অপারেটররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দুর্যোগকালীন কিংবা শান্তিপূর্ণ সময়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ, নিজেদের সুসংগঠিত ও দক্ষ করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
সেমিনারে প্রথাগত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে অ্যামেচার বা হ্যাম রেডিওর কারিগরি দিক, লাইসেন্স প্রক্রিয়া ও দুর্যোগকালীন পূর্বপ্রস্তুতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। এতে সারা দেশ থেকে আসা শতাধিক অ্যামেচার রেডিও অপারেটর অংশ নেন। তারা রেডিও ইকুইপমেন্ট, স্যাটেলাইট সরঞ্জাম, ওয়াকিটকি এবং ট্রান্সমিটার প্রদর্শন করেন।
কমিশনের স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক দূরপাল্লায় টেলিযোগাযোগের ইতিহাস, হ্যাম তথা অ্যামেচার রেডিওর আবির্ভাব, রেগুলেশন ও বিভিন্ন দেশে দুর্যোগকালীন সময়ে এর অবদান তুলে ধরেন।
অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদের বাংলাদেশের দুর্যোগের ধরন অনুযায়ী দলভিত্তিক কার্যক্রম সম্পাদন, সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজন এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার পরামর্শ দেন তিনি। অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজতর করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সেমিনারে অ্যামেচার রেডিও অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এআরএবি) ও অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি অব বাংলাদেশ (এআরএসবি)-এর প্রতিনিধিরা তাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন। অ্যামেচার রেডিওকে দুর্যোগ প্রটোকলে অন্তর্ভুক্ত করা, রিসিভার আমদানিতে কাস্টমস জটিলতা দূর করা, অনলাইনের মাধ্যমে লাইসেন্স সহজ করা, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে দুর্যোগকালীন প্রথম রেসপন্সকারী হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করেন তারা।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার মাহমুদ হোসেন বলেন, বিটিআরসির পক্ষ থেকে অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। অবৈধ ওয়াকিটকি পরিহার করে বিটিআরসি নীতিমালার আলোকে রেডিও ইকুইপমেন্ট ক্রয় এবং ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।
বাংলাদেশে ১৯৭৯ সালে অ্যামেচার রেডিওর যাত্রা শুরু হয়। ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর এটি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করে। বিটিআরসি থেকে এখন পর্যন্ত ৮১৩ জনকে অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স পরীক্ষার মাধ্যমে কল-সাইন প্রদান করা হয়েছে। প্রথম দিকে অ্যামেচার রেডিওর কার্যক্রম শখের ভিত্তিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এর ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। ১৯২৫ সালে অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদের জন্য আন্তর্জাতিক অ্যামেচার রেডিও ইউনিয়ন গঠিত হয় এবং প্রতি বছর ১৮ এপ্রিল আন্তর্জাতিক অ্যামেচার রেডিও দিবস পালন করা হয়।
অ্যামেচার রেডিও বা হ্যাম রেডিও হলো অপেশাদার বেতার যোগাযোগ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায়, রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত বিনোদন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং জরুরি অবস্থার জন্য তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]