বিশ্বজুড়ে ‘ভালো থাকা’ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, সবচেয়ে পিছিয়ে দক্ষিণ এশিয়া


বিশ্বজুড়ে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে মানুষের মধ্যে আশাবাদ বাড়ছে। সোজা কথায় উঠতি ধনীদের সংখ্যা বাড়ছে। এমনটাই উঠে এসেছে গবেষণা সংস্থা গ্যালাপের সাম্প্রতিক এক জরিপে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ‘থ্রাইভিং’—অর্থাৎ আয় ও জীবনযাত্রার দিক থেকে ‘ভালো থাকা’ মানুষের অনুপাত এবার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।
গ্যালাপের জরিপের বরাত দিয়ে আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে বিশ্বের ১৪২টি দেশে পরিচালিত এই জরিপে দেখা গেছে, গড় হিসেবে প্রতি ৩ জন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন অর্থাৎ, ৩৩ শতাংশ মানুষ নিজেদের জীবনকে যথেষ্ট ভালো হিসেবে মূল্যায়ন করেছেন। ২০২৩ সালের তুলনায় এই হার ২ শতাংশ বেশি।
অন্যদিকে, মাত্র ৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা ‘সাফারিং’ বা কষ্টের মধ্যে আছেন, যা ২০১৪ সালের ১২ শতাংশের তুলনায় অনেক কম। গত প্রায় দুই দশক ধরেই মানুষের জীবনের প্রতি সন্তুষ্টির এই ধারা ধীরে ধীরে বাড়ছে বলে জানিয়েছে গ্যালাপ। ২০০৮ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পর ‘থ্রাইভিং’ মানুষের গড় অনুপাত ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।
গ্যালাপের জ্যেষ্ঠ বৈশ্বিক সংবাদ লেখক বেনেডিক্ট ভিগার্স বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে যুদ্ধ ও প্রযুক্তিগত অস্থিরতার মতো নানা বড় চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আজ বিশ্বজুড়ে আরও বেশি মানুষ বলছেন, তাঁরা আগের চেয়ে ভালো জীবন যাপন করছেন এবং আগামীর জন্য আশাবাদী। কষ্টে থাকা মানুষের সংখ্যা কমছে।’
জরিপ অনুযায়ী, উত্তর ইউরোপে সবচেয়ে বেশি মানুষ নিজেদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট। ওই অঞ্চলে গড় ৬৬ শতাংশ মানুষকে ‘থ্রাইভিং’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর পর রয়েছে উত্তর আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড, যেখানে এই অনুপাতের গড় ৪৯ শতাংশ।
অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়া, সাব-সাহারান আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলগুলোর মানুষের জীবন নিয়ে সবচেয়ে কম সন্তুষ্টি প্রকাশ পেয়েছে। এসব অঞ্চলে যথাক্রমে গড়ে ১১,১৫ ও ১৭ শতাংশ মানুষ নিজেদের জীবনকে ভালো বলেছেন। তবে, গত এক দশকে ১২টি দেশে ‘থ্রাইভিং’ মানুষের অনুপাত ২০ পয়েন্ট বা তার বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, স্লোভেনিয়া, লিথুয়ানিয়া, এস্তোনিয়া ও হাঙ্গেরি।
গ্যালাপ জানিয়েছে, মানুষের এই জীবনমানের মূল্যায়নের সঙ্গে জাতিসংঘের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সের সামঞ্জস্য রয়েছে। এই সূচক আয়, আয়ু ও শিক্ষাসহ বিভিন্ন মানদণ্ডে জীবনের মান পরিমাপ করে। যদিও উন্নয়ন সূচকে অগ্রগতির সঙ্গে ব্যক্তিগত সন্তুষ্টির বাড়বাড়ন্ত সব সময় সরাসরি মেলে না।