[ad_1]
‘এই ১০ কেজি চাউল না হয় ১০ দিন খামো, এরপরে...?’
গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৭: ৩১
ভেঙে যাওয়া চুলা মেরামত করছেন রংপুরের গঙ্গাচড়া আলদাতপুর ছয়আনি হিন্দুপল্লির ভুক্তভোগী কণিকা রানী। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘সরকারের লোকজন আজ ক্যা আসি বাড়িঘর ভালো করি দেয় চোল। দল বল নিয়া আসি হামার যে গরু ছাগল হাঁস মুরগি টাকা পয়সা সোনাদানা লুট করি নিয়া গেলই, তার কী হইবে? খাবার জন্য পাঁচ দশ কেজি করি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাউল দিছে। এই চাউল দিয়াই বা কী হইব? এই ১০ কেজি চাউল না হয় ১০ দিন খামো, এরপরে...?’
আজ মঙ্গলবার সকালে ভেঙে যাওয়া রান্নার চুলা মেরামত করার সময় আক্ষেপ করে এসব কথা বলছিলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া আলদাতপুর ছয়আনি হিন্দুপল্লির কণিকা রানী (৪৮)। এ সময় তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর বিবাহিত মেয়ের বাড়ি থেকে রেখে যাওয়া ১ লাখ টাকা এবং তাঁর রাজমিস্ত্রি ছেলের জমানো ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এর আগে গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়া বেতগাড়ি ইউনিয়নের এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাশের এলাকার লোকজন এসে ওই কিশোরের বাড়ি মনে করে আরেকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পরে আরেক দফা হিন্দুপল্লিতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
এতে ১৯টির মতো পরিবারের ঘরবাড়ি তছনছ হয়। আতঙ্কে ৫০টির মতো পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিলেও গতকাল সোমবার ঘটনাস্থলে জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল পরিদর্শনে গেলে তখন তাঁরা ফিরে আসেন। হামলা ঠেকাতে গিয়ে এক পুলিশ সদস্যও আহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত আরেক বাড়িতে গেলে কথা হয় রবীন্দ্রনাথ রায় (৫০) নামের এক ভুক্তভোগীর সঙ্গে। তিনি ভেঙে যাওয়া বাসন হাতে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বাড়িতে থাকা আসবাবপত্র, রান্নার পাতিল, ৪টা গরু ও একটি বেসরকারি এনজিও থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং বাড়িতে জমানো ২০ হাজার টাকা তারা লুট করে নিয়ে গেছে।’
জানতে চাইলে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানকার পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক রয়েছে। শুধু তিনটি পরিবার ছাড়া সবাই এখন তাদের নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করতেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এখানে পর্যাপ্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ‘আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে ১৫ বান্ডিল টিন ও ৩০ বস্তা শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২০টি মাটির চুলা ও চারটি টিউবওয়েল মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। তাদের ঘরবাড়িগুলো মেরামত করতে যা কিছু লাগবে, তা আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বহন করব।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]