[ad_1]
খেলাধুলা তাঁর অস্থিমজ্জায়। বাবা একসময় ফুটবলার ছিলেন, এখন ফুটবল সংগঠক। ছোট বোন আফঈদা খন্দকার বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক। বাবা ও ছোট বোনকে দেখে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নই দেখেছিলেন আফরা খন্দকার। স্বপ্নটা ধূলিসাৎ হয়ে যায় দ্রুতই। তবে সেই আক্ষেপ পেছনে ফেলে আফরা এখন আলো ছড়াচ্ছেন বক্সিংয়ের রিং।
পল্টনের মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে পরশু শুরু হয়েছে জাতীয় বক্সিং। আফরা সেখানে খেলছেন ৫২ কেজি ওজন শ্রেণিতে। গতকাল বরিশালের লুবাবার বিপক্ষে খেলা ছিল তাঁর। ওয়াক ওভার পেয়ে পৌঁছে যান সেমিফাইনালে। সকাল ১০টায় খেলা থাকলে বিকেল পর্যন্ত অনুশীলন চালিয়ে যান আনসারের এই বক্সার। শোনালেন বক্সিংয়ে উঠে আসার গল্প, ‘বাবার হাত ধরেই ফুটবলে শুরু। এরপর সাতক্ষীরায় আমাদের কোচ বাহার স্যার যান সাত দিনের ক্যাম্প করাতে। ওটা ছিল ফেডারেশন থেকে একটা প্রতিভা অন্বেষণ ক্যাম্প। তো ওই স্যারদের হাত ধরেই বক্সিংয়ে শুরু। ওই সময় সারা দেশ থেকে খেলোয়াড় নিয়ে আসা হয়, আমরা ১৫ দিনের ক্যাম্প করি। এরপর বিকেএসপিতে ভর্তি হই, আমাদের যে সেক্রেটারি কুদ্দুস স্যার আছেন, তিনি আমাদের ভর্তির সুযোগ করে দিয়েছিলেন।’
২০১৭ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন আফরা। আফঈদা ভর্তি হন তাঁরও এক বছর আগে। জাতীয় পর্যায়ে স্বাধীনতা কাপে প্রথমবার রুপা জেতেন আফরা। বিজয় দিবস, যুব গেমসে সোনা জেতার পাশাপাশি ২০২১ সালে সিনিয়র প্রতিযোগিতায় পেয়েছেন রুপা। পেশাদার বক্সিংয়েও খেলেছেন তিনি। বললেন, ‘আমার ইচ্ছা ছিল ফুটবলার হওয়া। বিকেএসপিতে ফুটবলার হিসেবে সুযোগ না পাওয়ায় বক্সিংয়ে যোগ দিই। সেখান থেকে বক্সিং শুরু। আগে আফসোস ছিল ফুটবলার হতে না পারার। তবে এখন বক্সিং অনেক দূর এগিয়েছে।’
আফরার ক্যাটাগরিতেই খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জিনাত ফেরদৌস। ফাইনালের আগে যদিও দেখা হওয়ার সম্ভাবনা নেই দুজনের। জিনাতও বাই পেয়ে উঠেছেন সেমিফাইনালে। বক্সিংয়ে তাঁকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বেশ। সেসবে খুব গুরুত্ব দিচ্ছেন না আফরা, ‘আগামীকাল (আজ) সেমিফাইনাল খেলব। তবে কার সঙ্গে খেলা পড়বে, সেটা এখনো জানি না। আশা করি, সোনা জিতব এবার।’
বক্সিংয়ে অনুশীলন ক্যাম্প চান আফরা, ‘একসঙ্গে আমরা যদি ফুটবলারদের মতো ক্যাম্প করতে পারি, তাহলে আমরাও ভালো করতে পারব। দেশের বাইরে গিয়েও ভালো ফল আনতে পারব।’
ফুটবলে আফঈদা এখন বেশ পরিচিত মুখ। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক। তাঁর নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপে খেলার সুযোগ হয়েছে। তিন বছরের ছোট আফঈদাকে নিয়ে গর্ব হয় ২১ বছর বয়সী আফরার, ‘সে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে, এটা খুবই আনন্দের। অনেক গর্বের বিষয় এবং সবাই (পরিবারের) অনেক খুশি।’
রিংয়ে বোনকে মার খেতে দেখলে কষ্ট হয় আফঈদার! এ কারণে বক্সার বোনকে খেলা ছেড়েও দেওয়ার পরামর্শ তাঁর। তিনি বলেন, ‘আফঈদা বলে, আপু, তুমি খেলা ছেড়ে দাও। কেন বক্সিং খেলো? মার খাওয়ার কী দরকার (হাসি)! ছোটবেলা থেকে মারামারি পছন্দ করি না। কিন্তু এখন মারামারি ভালো লাগে; তবে সেটা শুধু রিংয়ের মধ্যে, বাইরে না।’
[ad_2]
ঠিকানা: ১১৮ হাবিব ভবন ৪র্থ তলা, বিবিরপুকুর পশ্চিম পাড়, বরিশাল-৮২০০
মোবাইল: 01713956574, 01712445776 ইমেইল: [email protected]