ফুলবাড়ী হাসপাতাল: অস্ত্রোপচার ও পরীক্ষা বন্ধ


দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও কর্মচারী সংকটে ব্যাহত হচ্ছে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা, অপারেশন (অস্ত্রোপচার), পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম। জানা গেছে, হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো থাকলেও জনবলের অভাবে বন্ধ রয়েছে সিজার, অ্যাপেন্ডিসাইটিসসহ জরুরি অস্ত্রোপচার। এদিকে ধারণক্ষমতার বেশি রোগী ও জনবলসংকটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জনবলসংকটে প্যাথলজিক্যাল টেস্টও ব্যাহত হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট মঞ্জুর করা পদের সংখ্য ১৮২ জন। এগুলোর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ১১৭ জন; ৬৫টি পদ শূন্য রয়েছে। তার মধ্যে কনসালট্যান্টসহ প্রথম শ্রেণির চিকিৎসক ২৬ জনের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৮ জন, ১৮টি পদ শূন্য। কনসালট্যান্টসহ ২৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে আছেন মাত্র ৮ জন। এই ৮ জনের মধ্যে ১ জন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ১৩ জন মেডিকেল অফিসারের স্থলে কর্মরত রয়েছেন ৩ জন ও একজন প্রেষণে। ১ জন ডেন্টাল সার্জন, ২ জন কনসালট্যান্ট।
তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (সকল) ৬৯ জনের স্থলে রয়েছে ৩৬ জন, বাকি ৩৩ পদ শূন্য। সিএসসিপি (৩য় শ্রেণি) ২৬ জনের মধ্যে রয়েছে ২৪ জন, ২টি পদ শূন্য। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ২১ জনের স্থলে রয়েছে ১১ জন, এ পদে ১১টি পদ শূন্য। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির এমএসসি হোমিওপ্যাথি ১ জন কর্মরত রয়েছেন। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা (নার্স মিডওয়াইফ) ৩৭ জন রয়েছেন। দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিউট্রিশনিস্ট হিসেবে কর্মরত ১ জন।
সূত্র জানায়, ৭ জন চিকিৎসক উপস্থিত থাকলেও দাপ্তরিক ও অন্যান্য কাজে নিয়োজিত থাকায় রোগী দেখতে পারেন মাত্র ৩ জন। এখানে ওয়ার্ড বয় ২ জনের স্থলে কর্মরত ১ জন, সুইপার ৫ জনের স্থলে ২ জন, এমএলএসএস ৫ জনের স্থলে ২ জন। এ ছাড়া আয়া, ট্রলিম্যান, ইসিজি কার্ডিওগ্রাফার, ফিজিওথেরাপি, টিকিট কাউন্টার ম্যান পদে নেই কোনো কর্মচারী।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে উপচে পড়া ভিড়। বেড না পেয়ে অনেকে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নরমাল ডেলিভারির পাশাপাশি জটিল রোগীদের সিজারের প্রয়োজন হলে এখানেই তা করার ব্যবস্থা ছিল। বর্তমানে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। গর্ভবতী মায়েরা ঝুঁকি এড়াতে প্রাইভেট ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘পাশের উপজেলা থেকে রোগী আসায় ফুলবাড়ীতে রোগীর চাপ অনেক বেশি। বারবার চাহিদা পাঠানো হলেও জনবল নিয়োগের জটিলতায় কাঙ্ক্ষিত সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন ও অধিকাংশ প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা জনবলসংকটে স্থবির হয়ে পড়েছে।’