নুরুল হুদাকে জুতার মালা পরানোর প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্যে যা বললেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ


এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদার জন্য যারা মায়াকান্না করছেন, যদিও বিষয়টি কোনোভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়। তিন দিন ধরে আমরা মিডিয়ায় এর জন্য যে সুশীল কথা শুনছি, কিন্তু এই গুম হওয়া পরিবারগুলোর জন্য তো আমরা কোনোদিন সুশীলদের মুখ থেকে সহানুভূতির শব্দ শুনলাম না। এই পরিবারগুলোর জন্য কি গণমাধ্যমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে? এই হচ্ছে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য—সময় বদলায়, কিন্তু তার বয়ান বদলায় না। এমন এক পরিবেশ তৈরি করে দেয়, যেখানে নুরুল হুদার গলায় জুতার মালা পরানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়, হাজার হাজার হারিয়ে যাওয়া মানুষের গল্পের চেয়ে।
আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে মায়ের ডাক এবং মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র আয়োজিত ‘নির্যাতনের শিকারদের সহায়তা, বিচার ও ক্ষতিপূরণ’ নিয়ে জাতীয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় গুম এবং নির্যাতনের শিকার হওয়া অনেক পরিবারের সদস্যবৃন্দ তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্মমতার বিবরণ তুলে ধরেন। এ ছাড়াও সেখানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব প্রমুখ।
ফুয়াদ বলেন, একজন মা এসে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই, আর কত কাদলে আমরা বিচার পাব? এইটা বলে দেন। তাহলে আমরা আরও কিছুদিন কাঁদবো, তারপর থামবো।’ তিনি বলেন, ‘আমার ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ভাঙতে পারছি না, এফডিআর ভাঙতে পারছি না, জমির মিউটেশন করতে পারছি না, মেয়ের বিয়ে দিতে পারছি না।’ সমাজে তো একটা ট্যাবু আছে—বাবা না থাকলে, তার ওপরে গুজব থাকে। ‘ও মাস্তান ছিল, চাঁদাবাজ ছিল, বিএনপি করতো’—এইসব রটানো হয়। সেই কারণে মেয়ের বিয়েতে সমস্যা হয়।
মাহদী আমিন বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে ১০ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো আমরা নিশ্চিতভাবে জানি না—কতজন মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শহীদ হয়েছেন, বা কতজন গুম হয়েছেন। এই তালিকাটি নির্মোহভাবে তৈরি করা জরুরি ছিল, এবং রাষ্ট্রের উচিত ছিল প্রত্যেক পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি, যদি এই অন্তর্বর্তী সরকার সেটা করতে না-ও পারে, ভবিষ্যতে ইনশাআল্লাহ বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসলে সেটা নিশ্চিতভাবে করবে—এটা আমাদের প্রতিশ্রুতি। প্রত্যেক শহীদ ও গুম হওয়া পরিবারের পাশে আমরা থাকব, তদন্ত করব, আর ভবিষ্যতে বাংলাদেশে যেন কখনো ‘আয়নাঘর’ না হয়—সেই নিশ্চয়তা দেব।