বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের পাঞ্জাবে ২৯ জনের মৃত্যু, ক্ষতিগ্রস্ত আড়াই লাখের বেশি


প্রায় এক মাস ধরে চলা প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলের কারণে ভারতের পাঞ্জাবে শতদ্রু, বিয়াস ও রবি নদীর পানি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গিয়েছে। প্লাবিত হয়েছে বহু জেলা। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ১ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যটিতে অন্তত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। এটিকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যা বলে অভিহিত করেছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসনের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ২৩ জেলার মধ্যে ১২টি জেলা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটেছে সীমান্তবর্তী পাঠানকোট জেলায়। এখানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অমৃতসর, বরনালা, হোশিয়ারপুর, লুধিয়ানা, মানসা ও রূপনগরে তিনজন করে মারা গেছেন। বাথিন্ডা, গুরদাসপুর, পাটিয়ালা, মোহালি ও সাঙ্গরুরে একজন করে প্রাণ হারিয়েছেন।
বন্যায় শুধু প্রাণহানি নয়, বিপুলসংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুতও হয়েছেন। এরইমধ্যে রাজ্যজুড়ে ১৫ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গুরদাসপুর থেকে সবচেয়ে বেশি— ৫ হাজার ৫৪৯ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। ফাজিলকা, ফেরোজপুর, অমৃতসর ও পাঠানকোট থেকেও কয়েক হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৪৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অমৃতসর জেলার মানুষ। এক জেলায় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফেরোজপুর, ফাজিলকা, পাঠানকোট, গুরদাসপুরসহ অন্যান্য জেলাতেও হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এ বন্যায় প্রায় এক লাখ হেক্টরের বেশি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। গবাদিপশুরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কত সংখ্যক পশু মারা গেছে, তা পানি না নামা পর্যন্ত জানাতে পারছে না প্রশাসন।
একইভাবে সড়ক, সেতু ও গ্রামীণ অবকাঠামোর ক্ষতির পরিমাণও এখনো নিরূপণ করা যায়নি।
বর্তমানে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)-এর ২০টি দল পাঠানো হয়েছে। সেনাবাহিনী, এসডিআরএফ ও স্থানীয় পুলিশ উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। বন্যার্তদের ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানোর জন্য ত্রাণশিবির গড়ে তোলা হয়েছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী একে ‘পাঞ্জাবের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা’ আখ্যা দিয়েছেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন। আগামী কয়েক দিনে নতুন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ক্রাইম জোন ২৪