শিরোনাম

সার নিয়ে হযবরল, ভুক্তভোগী কৃষক

সার নিয়ে হযবরল, ভুক্তভোগী কৃষক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সরকারনির্ধারিত দামে চাহিদা অনুযায়ী কৃষকেরা সার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ডিলারদের দাবি, বরাদ্দ কম থাকায় কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী তাঁরা সার দিতে পারছেন না। অন্যদিকে কৃষি বিভাগ বলছে, পর্যাপ্ত সার বরাদ্দ আছে। কোনো সংকট নেই।

তথ্য বলছে, সরকারনির্ধারিত প্রতি বস্তা ইউরিয়া সার ১ হাজার ৩৫০, ডিএপি ১ হাজার ৫০, এমওপি ১ হাজার, টিএসপি ১ হাজার ৩৫০ টাকা। তবে কৃষকদের অভিযোগ, খুচরা সার বিক্রেতাদের কাছ থেকে তাঁদের বাড়তি দামে সার কিনতে হচ্ছে। প্রতি বস্তা কিনতে ডিএপি ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০, এমওপি ১ হাজার ১০০, টিএসপি ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত লাগছে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, জেলার পাঁচ উপজেলায় ৫৮ জন বিসিআইসি ও ৩৯ জন বিএডিসি সার ডিলার আছেন। আর প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে ৪০৯ জন সাব ডিলার রয়েছেন। এসব ডিলারের কাছ থেকে কৃষকেরা সার সংগ্রহ করে থাকেন।

তরুণ উদ্যোক্তা ও কৃষক গোলাম মোস্তফা সুমন বলেন, ‘বিএডিসি ও বিসিআইসি সার ডিলাররা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে কৃষকদের সরকারনির্ধারিত দামে কোনো সার দিচ্ছেন না। কিন্তু খুচরা দোকানে বাড়তি দামে সার মিলছে। ডিলারদের কাছে গেলে তাঁরা বলেন, বরাদ্দ নেই, সার কম। কিন্তু ডিলাররা বাইরে থেকে বাড়তি দামে সার কিনে এনে বেশি দামে বিক্রি করছেন। বাইরে পাচারও করছেন। মোদ্দা কথা, কৃষি বিভাগে সার নিয়ে একেবারে হযবরল চলছে।’

আরেক কৃষক আসাদুল আল মাহমুদ বিপ্লব বলেন, ‘এখানে বেশির ভাগ সারের ডিলার আওয়ামী লীগ-বিএনপির। তাঁরা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য কৃত্রিম সংকট করে মেমো ছাড়া বেশি দামে সার বিক্রি করছেন।’

বিএডিসি অনুমোদিত ডিলার মেসার্স একরামুল হক অ্যান্ড সন্সের ছেলে মো. আকিব বলেন, ‘সরকারের ভর্তুকির সার ছাড়াও বাইরে থেকে কিনে এনে আমরা বিক্রি করছি। সরকার আমাদের যে পরিমাণ সার দেয়, সেগুলো আমরা কৃষকদের মাঝে বিক্রি করছি। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সেটা কম। যার কারণে এটা হচ্ছে। তবে সিন্ডিকেট ও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দাম নেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষি বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলারেরা বরাদ্দ করা সার পুরো উত্তোলন না করে সেটা তাঁরা বাইরে বিক্রি করে দেন। যার ফলে কৃষকেরা সার পাচ্ছেন না। এ ছাড়া যাঁরা অতিরিক্ত দাম নিচ্ছেন, তাঁরা বেশির ভাগ বাইরে থেকে সার কিনে আনছেন। এখানে পুরো কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জড়িত। ডিলারদের সার উত্তোলনের রেজিষ্টার বই চেক করলেই আসল তথ্য বের হয়ে আসবে।’

এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ইয়াছিন আলী বলেন, ‘ডিলার সিন্ডিকেটের কোনো প্রশ্নই আসে না। কারণ, প্রতিনিয়ত কৃষি বিভাগের মনিটরিং জোরদার থাকে।’ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ডিলারদের সরকারকে বেকায়দায় ফেলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি তো জানি না এখানে কে আওয়ামী লীগের ডিলার আর কে বিএনপির। এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button