এবার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬৩ বিলিয়ন ডলার


বৈশ্বিক বাজারের অনিশ্চয়তা, কাঁচামালের দাম ওঠানামা ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন সংকটের মধ্যেও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা রপ্তানি মিলিয়ে ৬৩.৫ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার; যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৬.৫ শতাংশ বেশি। এই লক্ষ্য শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়, বরং বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের সক্ষমতা ও প্রতিযোগিতা শক্তি যাচাইয়ের বড় সুযোগ। সরকারের মতে, লক্ষ্যটি রক্ষণশীলভাবে নির্ধারণ করা হলেও বাস্তবে রপ্তানি আয় আরও বাড়তে পারে। বাজার সম্প্রসারণ ও নীতিসহায়তার সমন্বিত পরিকল্পনার ওপর ভর করে তৈরি পোশাক, চামড়া, পাট, কৃষিপণ্য ও সেবা—সব খাতকেই নতুন উদ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান চলতি অর্থবছরের রপ্তানি আয়ের নতুন লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সচিব জানান, বছরজুড়ে নির্ধারিত রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে খাতভিত্তিকভাবে তৈরি পোশাকের ওভেন সেগমেন্ট থেকে ২০.৭৯ বিলিয়ন ডলার এবং নিট পোশাক থেকে ২৩.৭০ বিলিয়ন ডলার আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে ১.২৫ বিলিয়ন ডলার, পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে ৯০০ মিলিয়ন ডলার এবং কৃষিপণ্য থেকে ১.২১ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। সেবা খাতে আয় বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে মন্ত্রণালয়ের পূর্বাভাসের তুলনায় আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা তুলনামূলকভাবে রক্ষণশীলভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে, তবে বাস্তবে আয়ের পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে। তিনি বলেন, অপ্রচলিত পণ্য রপ্তানি ও নতুন বাজার সম্প্রসারণে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বর্তমানে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা চলছে, যদিও এসব চুক্তির মধ্যে কোনটি বাংলাদেশের জন্য অনুকূল না-ও হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডিউটি-ফ্রি বাজারের সুযোগ সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগানোর পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ ২০ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার চেষ্টা চলছে। তবে শুল্ক হ্রাস নিয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তির তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানির ক্ষেত্রে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ পণ্যে শূন্য শুল্ক রয়েছে।
ক্রাইম জোন ২৪