শিরোনাম
বিএনপির ৩ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫যে গ্রামের সবাই তিন বেলা একসঙ্গে খায়আসামিদের ভয়ে মামলা তুলে নিতে চান শহীদ সাজিদের বাবাশার্শায় সরকারি চালের বস্তা ছিনতাই, বিএনপির দুই কর্মী গ্রেপ্তারনীলসাগর ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সারা দেশে দুই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধভারতের অর্থনীতি মৃত—ট্রাম্পের এই বক্তব্য খারিজ করে দিল তাঁর দেশের সব এআইভারতের মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে হিমাচল প্রদেশ—সুপ্রিম কোর্টের সতর্কবার্তাযুক্তরাষ্ট্রের তুলায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক ছাড় পাবে বাংলাদেশ: বিজিএমইএগুলশানে চাঁদাবাজির মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা জানে আলম অপু রিমান্ডেমাদারীপুরে বালু তোলার ড্রেজার মেশিনে আগুন দিল উত্তেজিত জনতা

অবরোধকারীদের ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের’ হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় শাহবাগ ফাঁকা

অবরোধকারীদের ‘ভুয়া’ আখ্যা দিয়ে ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধাদের’ হামলা, পুলিশের লাঠিপেটায় শাহবাগ ফাঁকা

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের দাবিতে টানা ৩২ ঘণ্টা শাহবাগ অবরোধ করে রাখা ‘জুলাইযোদ্ধা সংসদ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মকে অবশেষে অবরোধ তুলে সরে যেতে বাধ্য করেছে একদল ছাত্র-জনতা। তারা নিজেদের ‘প্রকৃত’ জুলাইযোদ্ধা দাবি করে ওই আন্দোলনকারীদের ‘ভুয়া’ বলে আখ্যায়িত করে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শাহবাগ মোড় থেকে আন্দোলনকারীদের সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকেও কিছুটা লাঠিপেটা করা হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এর ফলে দীর্ঘ ৩২ ঘণ্টা পর শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম বলেন, ‘আমরা খুব বেশি লাঠিপেটা করিনি। যারা এসে অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়েছেন, তারা দাবি করেছেন—ভুয়া পরিচয়ে কেউ শাহবাগ অবরোধ করে থাকলে প্রকৃত যোদ্ধাদের সুনাম নষ্ট হয়। ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে, আর তা দেখে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রকৃত আহত তরুণেরা শাহবাগে এসে তাদের উঠিয়ে দিয়েছেন। দুই পক্ষ যেন বড় ধরনের কোনো ঝামেলা না হয় পুলিশ সেটা দেখেছেন।’

আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়া ‘প্রকৃত’ জুলাই যোদ্ধাদের একজন আব্দুল খালেক বলেন, ‘সরকার যদি সনদ না দেয়, আমরা ৫ তারিখে আবার নামব। কিন্তু দিনের পর দিন মানুষকে কষ্ট দিয়ে আমরা আন্দোলন করতে চাই না। এরা কিছু স্বার্থ নিয়ে এখানে বসেছিল।’

এর আগে সরেজমিনে দেখা গেছে, শাহবাগ মোড় জুড়ে ব্যানার, ফেস্টুন হাতে বসে ছিলেন ‘জুলাইযোদ্ধা সংসদ’-এর সদস্যরা। তাঁরা স্লোগান দিচ্ছিলেন—‘জুলাই সনদ দিতে হবে’, ‘টালবাহানা চলবে না’, ‘অন্তর্বর্তী সরকার জবাব দাও’। এর ফলে শাহবাগ, মৎস্য ভবন, কাঁটাবন ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়সহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পথে রোগী ও স্বজনদেরও চরম ভোগান্তিতে পড়তে দেখা যায়।

পথচারী লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘এক ঘণ্টার পথ এখন তিন ঘণ্টা লাগছে, এটা মেনে নেওয়া কঠিন।’ মহিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমার ছেলেও একজন জুলাইযোদ্ধা। শাহবাগ অবরোধের কারণে গাড়ি আটকে থাকায় ফার্মগেট নেমে বৃষ্টির মধ্যেই হেঁটে হেঁটে ঢাকা মেডিকেল যাচ্ছি।’ তিনি এই দুর্ভোগ দেখে আক্ষেপ করে বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ তো এমন হওয়ার কথা ছিল না।’

এদিকে বিকেলে হঠাৎ করেই একদল তরুণ শাহবাগে প্রবেশ করে অবরোধকারীদের ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। তাদের ‘ভুয়া’ বলে আখ্যা দিয়ে সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা হাতাহাতি হয়। পরে অবরোধকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ‘প্রকৃত’ জুলাইযোদ্ধা দাবি করে এক তরুণ বলেন, ‘সরকার তো ঘোষণা দিয়েছে, তবু জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে এরা এখানে পড়ে আছে। গতকালও তাদের বলেছিলাম সরে যেতে, তারা শোনেনি।’ তিনি নিজের জুলাই-আহত কার্ড বের করে দেখান।

প্রত্যক্ষদর্শী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দিন ধরে অবরোধ চলছে, মানুষ অতিষ্ঠ। এখন বুঝতে পারছি, যারা আজ এসে সরিয়ে দিল, তারাই আসল। তারা গুলির চিহ্ন দেখিয়েছে, পরিচয়পত্র দেখিয়েছে।’

শাহবাগ থানা-পুলিশ বলছে, শুরুতে কিছুটা সংঘর্ষ হলেও পরে অবরোধকারীরা পুরোপুরি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে কেউ গুরুতর আহত হননি। সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ শুক্রবার রাত পর্যন্ত শাহবাগ এলাকায় কোনো পক্ষের অবস্থান ছিল না এবং যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেছে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button