পাওনাদারের বাসায় ডেকে নেওয়ার পর শিক্ষকের মৃত্যু


বরিশালের মুলাদীতে পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য বাসায় ডেকে নেওয়ার পর এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে মুলাদী বন্দরের ব্যবসায়ী মো. ফরিদ উদ্দীন খানের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া মো. সবুজ হাওলাদার (৫৬) হিজলা উপজেলার চরপত্তনীভাঙা গ্রামের মৃত জালাল হাওলাদারের ছেলে। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী ছিলেন। তিনি মুলাদী কাজি অফিসের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং প্রাইভেট শিক্ষক হিসেবে ছাত্রছাত্রী পড়াতেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাসে সুদ পরিশোধের শর্তে ব্যবসায়ী ফরিদের কাছ থেকে টাকা ধার করেছিলেন সবুজ। পাওনা পরিশোধে দেরি হওয়ায় তাঁকে গতকাল রাতে ফরিদ বাসায় ডেকে নেন।
সবুজের ভাই দেলোয়ার হাওলাদার জানান, প্রায় এক বছর আগে জনৈক আব্দুর রহমানের মাধ্যমে ফরিদের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ধার নেন সবুজ। ওই টাকার সুদ হিসেবে প্রায় ১ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছিল। এরপরও সুদ-আসলসহ আরও ২ লাখ টাকা দাবি করা হয়। গত ২০ জুলাই ওই টাকা পরিশোধের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন রহমান ও ফরিদ।
দেলোয়ার বলেন, নির্ধারিত সময়ে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গতকাল রাতে ফরিদ মোবাইল ফোনে সবুজকে বাসায় ডেকে নেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই বাসায় যান সবুজ। পৌনে ১১টার দিকে সংবাদ পাওয়া যায়, তিনি সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে তাঁকে ওই বাসা থেকে মুলাদী উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে মনে না হওয়ায় পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী ফরিদ বলেন, ‘সবুজ হাওলাদারের কাছে ২ লাখ টাকা পাওনা ছিল। তিনি দিই-দিচ্ছি বলে সময়ক্ষেপণ করছিলেন। তাই পরিশোধ করার সময় জানতে ফোন করেছিলাম। তিনি ২০-২৫ দিন সময় নেওয়ার কথা বলার জন্য বাসায় এসেছিলেন। সেখানে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতাল নেওয়া হয়।’
এ বিষয়ে মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সবুজ হাওলাদারের পরিবারের সদস্যরা প্রাথমিকভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে সন্দেহ করায় লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় পরিবার মামলা, অপমৃত্যুর মামলা, জিডি কিংবা অভিযোগ করলে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।