শিরোনাম
খিলগাঁওয়ে পুরি-শিঙাড়া বিক্রেতাকে পিটিয়ে হত্যাসাপের বিষে তৈরি যে মদ পাওয়া যায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশেচাঁদা না পেয়ে ঘরে ঢুকে ব্যবসায়ীকে গুলিব‍্যাংকে হামলা চালানো সেই যুবদল নেতা দল থেকে বহিষ্কার‘নোবেল ডিজিজ’ কী, অনেক নোবেল বিজয়ী এই ‘রোগে’ আক্রান্ত হন কেনকিছু লোক বিদেশে টাকা পাচারের জন্যই কারখানা করেছেন: সাখাওয়াত হোসেনবিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আজ কেমন করলেন বাংলাদেশি দুই সাঁতারু‘ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু’: হাসপাতাল ভাঙচুর, ফটকে তালাগাজায় খাদ্যের খোঁজে দুই দিনে প্রাণ গেল শতাধিক ফিলিস্তিনির: জাতিসংঘজুলাই হত্যাকাণ্ডে নিহত ১১৪ জনের মরদেহ তোলা হবে রায়েরবাজার গণকবর থেকে

বন্দীদের দেখতে এসে দুর্ভোগে স্বজনেরা

বন্দীদের দেখতে এসে দুর্ভোগে স্বজনেরা

ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারের সামনে ছাউনি নেই, নেই বসার ব্যবস্থা। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে রাস্তার পাশে বসে আছেন নানা বয়সী মানুষ। কারও মুখে উদ্বেগ, কারও মুখে বিরক্তি। কারাগারে থাকা প্রিয়জনদের সঙ্গে একটুখানি দেখা করতে আসা এসব মানুষ প্রতিদিনই পড়ছেন ভোগান্তিতে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা কারাগারের মূল ফটকের সামনে দেখা যায়, কেউ ছাতা মাথায় দিয়ে বসে আছেন, কেউ ছোট্ট কাগজ বিছিয়ে ভেজা মাটিতে। কেউ এসেছেন ঠাকুরগাঁও শহরের পাশের এলাকা থেকে, কেউ আবার পঞ্চগড় বা হরিপুর থেকে।

আটোয়ারী উপজেলার সরদারপাড়া গ্রামের ৭০ বছর বয়সী পুতুল রানী বলেন, ‘আমার ছেলে এই কারাগারে আছে। সকাল থেকে এখানে বসে আছি। বসার জায়গা নাই, আশপাশে কোনো ছাউনি নেই। খাওয়ার পানি বা বিশ্রামেরও কোনো ব্যবস্থা নাই।’ বোদা উপজেলার শ্যামলী রানী বলেন, ‘স্বামী বন্দী আছেন। তাঁকে দেখতে এসেছি। কিন্তু এত কষ্ট করে এসে বাইরে বসে থাকতে হচ্ছে। বসার বা আশ্রয়ের কোনো ব্যবস্থাই তো নাই।’

সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিসির বাংলো রোডে কারাগারের সামনে প্রায় ৪০-৫০ জন নারী-পুরুষ মাটিতে বসে আছেন। অনেকেই বৃদ্ধ, কেউ কেউ কোলে করে এনেছেন শিশুসন্তান। মুসলিমনগর এলাকার বিপাশা বেগম বলেন, ‘স্বামীকে দেখতে এসেছি। মোবাইল ফোন আর ব্যাগ নিয়ে ভেতরে যেতে দেয় না। বাইরে রাখারও কোনো নিরাপদ ব্যবস্থা নাই। কারও কাছে রেখে যাওয়ার উপায়ও নেই।’

রশিদা বেগম, হরিপুর উপজেলার আমগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘মোবাইল ফোন আর ব্যাগ খোয়া যাওয়ার ভয়ে স্বামীর সঙ্গে দেখা না করেই ফিরে গেলাম।’ স্বজনদের দাবি, নিরাপত্তা নিশ্চিতে মোবাইল ফোন ও ভ্যানিটি ব্যাগ রাখার জন্য টোকেনভিত্তিক একটি নিরাপদ বুথ চালু করা গেলে এই দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হতো।

ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারের প্রধান ফটকে অপেক্ষার প্রহর বন্দীদের স্বজনদের। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারের প্রধান ফটকে অপেক্ষার প্রহর বন্দীদের স্বজনদের। ছবি: আজকের পত্রিকা

শুধু বসার জায়গা কিংবা মোবাইল ফোন রাখার সমস্যাই নয়, অভিযোগ রয়েছে কারা ক্যানটিন নিয়েও। ঠাকুরগাঁও শহরের শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কারা ক্যানটিনে যে দামে খাবার দেয়, তা বাইরে বাজারদামের চেয়ে দুই-তিন গুণ বেশি। নিম্নবিত্তদের পক্ষে এসব কেনা অসম্ভব। অনেক সময় বাধ্য হয়ে খালি হাতে চলে যেতে হয়।’

মানবাধিকারকর্মী শারমিন বেগম বলেন, ‘কারাগার যেমন অপরাধীদের সংশোধনের জায়গা, তেমনি তার স্বজনদের প্রতি মানবিক আচরণ করারও দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের রয়েছে। কারা সংস্কারের অংশ হিসেবেই এসব মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা জরুরি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও জেলা কারাগারের জেল সুপার মাসুদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়গুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। দর্শনার্থীদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button